চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মৌলভিপাড়া এলাকায় গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রেললাইন থেকে মিঠুন দাস (২৭) নামের যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মিঠুন রাজশাহীর প্রেমানন্দ দাসের ছেলে। তার পরিবার কুমিল্লায় বসবাস করে। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাশের একটি মন্দির এলাকা থেকে ফেসবুক লাইভে আসেন মিঠুন। অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে নিজের ও পরিবারের নানা সংকটের কথা জানান। জানান দেন, আত্মহননের পথে যাচ্ছেন তিনি। এ জন্য সবার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। আড়াই ঘণ্টা পর অদূরে রেললাইন থেকে তার ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মিঠুন দাসের ফেসবুক আইডি ‘এম কে মিঠুন’ নামে। লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘কোনো দিন ভাবিনি আমি এ সিদ্ধান্ত নেব। এর আগে সিদ্ধান্ত নিলে এত বড় ক্ষতিটা হতো না। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিপত্তি কাটছে না। কোম্পানির ৩ লাখ টাকার মতো হারিয়ে ফেলেছি। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। আমি জানি, আমার পরিবারকে দেখার কেউ নেই; কিন্তু এই মুখ আমি মা-বাবাকে কীভাবে দেখাব। আমি চলে যাচ্ছি। যারা আমার কাছ থেকে টাকা পান, ক্ষমা করে দিয়েন। আমি আমার নিজের থেকে পরিবারটাকে শেষ হতে দেখতে পারি না। সরকারের কাছে একটা আবেদন- আমার পরিবারটাকে ঋণমুক্ত করেন, বাঁচিয়ে রাখেন। না ভালো স্বামী হতে পারলাম, না ভালো সন্তান। না ভালো ভাই হতে পারলাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।’
ফেসবুকে এই লাইভ ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে অনেকেই তাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন। কেউ কেউ অনুরোধ করেন মুঠোফোনে কল রিসিভ করার। ফেসবুকে লাইভের পরও দুটি পোস্ট দেন মিঠুন। সেখানেও তিনি টাকা হারিয়ে ফেলার বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষমা চান।
সীতাকু জিআরপি ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আশরাফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রামমুখী মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তার পকেটে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।