দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকার বাজার খাতুনগঞ্জে চলছে স্থবিরতা। নেই আগের মতো ক্রেতা। প্রায় প্রত্যেকটা ভোগ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও ক্রেতাদের টানতে পারছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি- ভোগ্যপণ্যের দরপতনের শঙ্কা থেকেই তারা ব্যাপক হারে কেনাকাটা করছেন না।
দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ বাজার খাতুনগঞ্জের ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের আইন সম্পাদক ও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের প্রায় প্রত্যেকটা পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তার পরও ক্রেতাদের তেমন উপস্থিতি নেই। পাইকারদের মধ্যে বিরাজ করছে দরপতনের শঙ্কা। এমন অবস্থায় কমেছে বেচাবিক্রি।’
জানা যায়, খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের দাম এক সময় নিয়ন্ত্রণ করত কয়েকটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পণ্যের দাম ‘উত্থান-পতন’ হতো। হাতিয়ে নেওয়া হতো শত শত কোটি টাকা। এ অবস্থায় অনেক ব্যবসায়ী পথে বসেছেন। সিন্ডিকেট সদস্যরা একেক সময় একেক পণ্য টার্গেট করে কারসাজি করেন। চাল, ডাল, আলু থেকে শুরু করে মসলা কিংবা তেল- সব পণ্যের দামের উত্থান-পতনের নেপথ্যে কাজ করেছে বাজার কারসাজি। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু ভোগ্যপণ্যের বুকিং রেট কমে যাওয়ায় এসবের দাম কমছে। তাই পাইকার ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কা থেকেই আগের মতো ব্যাপক হারে ভোগ্যপণ্য ক্রয় করছেন না। ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হওয়ায় অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে ভোগ্যপণ্যের বাজার।
খাতুনগঞ্জে গত বছর জুলাইয়ে পিঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ৯২ টাকা হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। একইভাবে ১৬০ টাকার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা। ১০০ টাকার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮৮ টাকা। ৭০ টাকার মটর বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, ১৩২ টাকার মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। একই সময় সয়াবিন (পাম) মণ ৫ হাজার ৮০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়েছে। গতকাল পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকা মণ। এ ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে হলুদ, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম।
ভোজ্যতেলে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আমদানিকারকরা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর ওঠানামা করছে। তাই সয়াবিন ও পাম উভয় তেলের দাম স্থির থাকছে না। তেলের বাজার পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এখানে আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে দাম এমনিতে কমে যাবে।