রংপুর মহানগরে প্রতিদিন ৪ হাজার কেজি ক্লিনিক্যাল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ২ হাজার কেজি অপসারণ করা সম্ভব হয়। বাকি বর্জ্য রংপুরের মানুষকে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে। বর্জ্য আইন না মানায় রংপুর মহানগর ক্লিনিক্যাল বর্জ্যরে দূষিত বাতাসের হটস্পটে পরিণত হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্জ্যরে কারণে নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা চরম হুমকির মুখে। কয়েক বছর আগে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একটি এনজিও ক্লিনিক্যাল বর্জ্য নষ্ট করার চুক্তি করলেও অধিকাংশ ক্লিনিক মালিক তা মানছেন না। এ বর্জ্যে নগরের মাটি, পানি ও বাতাস দূষিত হচ্ছে। ফলে হৃদরোগ, চর্মরোগ, শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগবালাই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ বিষয়ে রংপর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসাবর্জ্য বিধিমালা ২০০৮ সম্পর্কে কোনো ক্লিনিক মালিকের সঠিক ধারণা নেই। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছি। যাঁরা আইন অনুয়ায়ী ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ধ্বংস করছে না তাঁদের নোটিস করেছি। খুব দ্রুত তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘যারা আইন অনুয়ায়ী ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ধ্বংস করছে না তাদের নোটিস করেছি। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
রসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রধান মিজানুর রহমান
জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ২৫০ টন বর্জ্য জমে। ৩৩ ওয়ার্ডের মধ্যে পুরোনো ১৫ ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ১৫ ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ১২০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ১০০ টন অপসারণ করা সম্ভব হয়। অন্যদিকে প্রতিদিন ক্লিনিক্যাল বর্জ্য উৎপন্ন হয় ৩ থেকে ৪ টন। এর মধ্যে একটি এনজিওর মাধ্যমে ২ টন অপসারণ করা হয়। বাকি বর্জ্য নগরের পরিবেশ মারাত্মক দূষিত করছে।
স্থানীয় ক্লিনিক ও সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরে একটি সরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল এবং কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশেনের তথ্যানুয়ায়ী, ৩ শতাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার কেজি ক্লিনিক্যাল বর্জ্য বের হয়। ফলে নগরে আশঙ্কাজনক হারে রোগবালাই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। এ বিষয়ে রংপুর সিভিল সার্জন অফিসের জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তা মো. মাহবুবার রহমান বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল বর্জ্য অপসারণের দায় সিভিল সার্জন অফিসের নয়। এটি সিটি করপোরেশন দেখে থাকে।’