১০ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:৫৭

সিদ্ধিরগঞ্জে আক্রান্ত শিশুর পরিবারেও করোনার থাবা, ওষুধ ও খাদ্য সংকট

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

সিদ্ধিরগঞ্জে আক্রান্ত শিশুর পরিবারেও করোনার থাবা, ওষুধ ও খাদ্য সংকট

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সোহান নামে ১০ বছরের এক শিশুর পরিবারের আরও দুই সদস্যও আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পরিবারের বাকি দুই সদস্যের করোনা নেগেটিভ আসলেও শারীরিক অসুস্থতা বেশি হওয়ায় তার বাবাকে ইতোমধ্যেই হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুর ১টায় তাকে কাঁচপুরের সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেয়া হয়।

আক্রান্তের পরিবারের বড় ছেলে তন্ময় ইসলাম রিদয় জানান, গত ৩ এপ্রিল প্রথমে টেস্টের জন্য খানপুর হাসপাতাল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হলে ৬ তারিখ সেটির রিপোর্ট আসে। রিপোর্টে আমাদের পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য আমার ছোট ভাই করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়ে। পরে ৭ তারিখ পরিবারের বাকি ৪ জন সদস্যও অসুস্থতা অনুভব করলে সবারই টেস্ট করতে অনুরোধ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ৮ এপ্রিল নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। ৯ তারিখ তারা জানায় আমার মা আমেনা বেগম ও আমার মেঝ ভাই রিফাতের করোনা পজিটিভ এসেছে। তবে আমি এবং আমার বাবা জালাল আহমেদের নেগেটিভ এসেছে। 

তিনি আরও জানান, প্রথম থেকেই আমরা নিয়ম মেনে আমাদের ছোট ভাইকে আলাদা রাখছি। এখনো সে আলাদা। এর মধ্যে আমার বাবার শরীর খুবই খারাপ হয়ে যায় এবং আমরা বার বার চেষ্টা করি আইইডিসিআর এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের। কিন্তু কোথাও কথা বলতে পারছিলাম না। তারা ফোন ধরছিলেন না, আবার কেউ কেউ কেটে দিচ্ছিলেন। রাত থেকে চেষ্টার পর বাবার শরীর বেশি খারাপ হয়ে গেলে দুপুরের দিকে তাদের অ্যাম্বুলেন্স এসে বাবাকে সাজেদা ফাউন্ডেশনে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর নাকি তার কাছে ভয়ে ডাক্তার কিংবা নার্স কেউই আসছেন না এবং কোনো খাবারও দিচ্ছেন না। 

তন্ময় ইসলাম রিদয় জানান, তাদের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক উত্তরপাড়া বশিরউদ্দিন মার্কেট চিশতিয়া বেকারির সাথে অবস্থিত বাড়িটিতে বর্তমানে প্রধান ফটকে যেমন তালা দেয়া তেমনি তাদের ঘরের বাইরে থেকেও তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন বা শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে যাওয়ারও উপায় নেই এখন তাদের। এর মধ্যে ঘরে ওষুধ ও খাবারের প্রয়োজন পড়লে সেটি আনানোর জন্যও কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর এখন লোকের কথা বললেও তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সকালে ওষুধের কথা বললে রাতে দিয়ে যান। আর কোনো খাবারের কথা বললেই তিনি জানান, এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় আমরা খাদ্য সংকটেও রয়েছি পাশাপাশি ওষুধেরও। 

প্রধান ফটকে তালা দেয়ার পরও ঘরের বাইরে তালা দেয়ায় আরও ভয়ে রয়েছি যে বিশেষ বিপদ হলে তো আমরা ঘর থেকেও বের হতে পারবো না। যদিও আমরা সকল নির্দেশনা মেনে এমনিতেই ঘরেই অবস্থান করছি। তাই এতটা অমানবিক না হতে আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করছি। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

সর্বশেষ খবর