দেশের অর্ধেকেরও বেশি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী কোভিড-১৯ থেকে নিজেকে রক্ষায় যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন এবং এক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা কিছুটা এগিয়ে আছে। দেশের ৮ টি বিভাগে ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী ৬৭৫ জন কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীর উপর পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তারা তিনটি বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া, মাস্ক পরিধান এবং হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা।
ইউএসএআইডি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্প’ এর এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত মে মাসে “বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতে তরুণদের পুষ্টি সচেতনতা, আচরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা” বিষয়ে র্যাপিড সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন-এর সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আজ সোমবার গণমাধ্যমকর্মীদের এ সমীক্ষার ফলাফল জানানো হয়।
সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্পের প্ল্যানিং অ্যান্ড কোর্ডিনেশন স্পেশালিস্ট প্রজ্ঞায়ন বেহেরা ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ভামি বোরা সাংবাদিকদের জানান, কোভিড-১৯ এর কারণে ৭২.৬ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সেসব পরিবার যাদের বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ টাকার কম।
সমীক্ষায় অংশ নেয়া কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ৬৫.২ শতাংশ জানিয়েছে, স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তারা গৃহে কিংবা গৃহের বাইরে শরীর চর্চা করেছে যার মধ্যে রয়েছে দৌড়, স্ট্রেচিং ও ইয়োগা। উত্তরদাতাদের ৪৫ শতাংশ নির্ধারিত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমিয়েছে এবং ৫৫ শতাংশ ঘুমিয়েছে ৭ ঘণ্টার কম যা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম।
সমীক্ষার ফলাফলে বলা হয়েছে, ৫০ শতাংশের কাছাকাছি উত্তরদাতা লকডাউন পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে কম খাবার খেয়েছে। ৭৩ শতাংশ জানিয়েছে, তারা বাইরের খাবার খায়নি। সমীক্ষার ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড ১৯ এর কারণে ৩৬.৪ শতাংশ পরিবার মাঝারি কিংবা মারাত্মকভারে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে।
পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়ায়েজেদের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন পিআইবি পরিচালক (প্রশাসন) মো. ইলিয়াস ভূইয়া ও এফএও’র মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্পের চিফ ট্যাকনিকাল অ্যাডভাইজর নাওকি মিনামিগওসি।
সমাপনী বক্তব্য দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটের সহযোগী পরিচালক (গবেষণা) ফিরোজ আল মাহমুদ ও মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্পের সিনিয়র নিউট্রেশন এডভাইজর ললিতা ভট্টাচার্য।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বাস্থ্য সাংবাদিকতা ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ ও কৃষি সাংবাদিকতা ফোরামের সভাপতি আশরাফ আলী।
ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য ও কৃষি বীটের মোট ৩৩ জন সংবাদকর্মী অংশ নেন। ওয়েবিনারে সমন্বয়ক ছিলেন পিআইবি সিনিয়র প্রশিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা