খুলনা জেলায় নমুনা পরীক্ষায় একদিনে রেকর্ড ১১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩০১ জন খুলনা মহানগর ও জেলার। এদের মধ্যে ১১০ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে।
এদিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুলনা নগরীর খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর ও রূপসা উপজেলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তা’ মানতে অনীহা দেখা গেছে। শুক্রবার সকাল থেকে সোনাডাঙ্গা, নিউ মার্কেট এলাকায় ডে- সেভেন, গল্লামারী, ময়লাপোতা ফেরিঘাট খালিশপুরে স্বাভাবিকভাবে দোকানপাট খোলা ছিল। বিকালের দিকে ৭নং ঘাট এলাকায় বিভিন্ন বয়সী মানুষের অবাধ আড্ডা দেখা যায়। এসব স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মানা, সামাজিক দূরত্ব বা মাস্কের ব্যবহার নেই। নগরীর বিভিন্ন স্থানে চায়ের দোকানও খোলা রয়েছে। সেখানে সাধারণ মানুষকে জড়ো হতে দেখা যায়।
বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রূপসা ও জেলখানা খেয়াঘাটের চিত্র ছিল প্রতিদিনের মতোই। অধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাগুলো পার হতে দেখা গেছে। জেলখানা খেয়াঘাটে যাত্রীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নৌকায় যাত্রী ওঠানোর ক্ষেত্রে কোন নিয়মই মানছে না মাঝিরা। থাকছে না শারীরিক দূরত্ব, উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। জেলখানা খেয়াঘাটেও অধিক যাত্রী নিয়ে খেয়া পারপার হতে দেখা গেছে অধিকাংশ ট্রলারে। ভাড়াও দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে সেখানে।
তবে সকাল থেকে নগরীর সড়কে পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতি ছিল। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়েছে প্রশাসন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাত জনকে জরিমানা করে র্যাব।
জানা যায়, নগরীর খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর ও রূপসা উপজেলায় শুক্রবার ভোর থেকে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ চলবে ১০ জুন পর্যন্ত। খুলনা সদরে বর্তমানে করোনা সংক্রমণ হার শতকরা ৩৫, খালিশপুরে ২৫ এবং সোনাডাঙ্গাতে এই হার শতকরা ১৭। এছাড়া রূপসা উপজেলায় সংক্রমণের হার শতকরা ৪ দশমিক ১৮। জেলা প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জরুরি সেবা ব্যতিত এই সময়ে মধ্যে ওইসব এলাকার সকল দোকানপাট, মার্কেট, শপিং মল বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার ও তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এবং হোটেল রেস্তোরাঁগুলো প্যাকেজজাত খাবার সরবরাহ করতে পারবে। সন্ধ্যার পর রাস্তার মোড়ে বা কোন স্থানে একের অধিক কেউ অবস্থান করতে পারবে না বা একসঙ্গে চলাফেরা করা যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল