বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পাঁচ দিনে যমুনায় বিলীন ৩০০ বসতভিটা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

পাঁচ দিনে যমুনায় বিলীন ৩০০ বসতভিটা

শাহাজাদপুরের ব্রাহ্মণগ্রামে ভাঙন কবলিত এলাকা

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমলেও থামছে না ভাঙন। যমুনার তীব্র ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার হাজার হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমিসহ শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। একসময়ের বিত্তশালী পরিবার সব হারিয়ে মুহূর্তেই হয়ে যাচ্ছে ভূমিহীন নিঃস্ব। চোখের সামনে সব বিলীন হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছুই তাদের করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সব দেখেও নিচ্ছে না কোনো কার্যকর ব্যবস্থা।

সরেজমিন দেখা যায়, শাহজাদপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ও চৌহালীর চরসলিমাবাদে শুরু হয়েছে যমুনার ভয়াসহ ভাঙন। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে সাত গ্রামের তিন শতাধিক ঘরবাড়ি, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঁচটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, তাঁত কারখানাসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এখনো যাতের ভিটেটুকু অক্ষত আছে তারা সরিয়ে নিচ্ছেন ঘর ও মালামাল। ভাঙনকবলিত এলাকার আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘চোখের সামনে সবকিছু নদীতে চলে গেছে। এখন কোথায় যাব, কি করব? সরকারিভাবেও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছি।’ বয়োবৃদ্ধ আফছার, হানিফ সেখ বলেন, ‘৪০ বার নদীভাঙনের শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়েছি। বর্তমানে অন্যের জমিতে উঠলি হিসেবে রয়েছি। সেটিও ভাঙনের মুখে। এবার ভাঙলে আর যাওয়ার জায়গা নেই।’ স্থানীয় সাইদুল ও রাজসহ অনেকে জানান, ভাঙনরোধে পাউবো থেকে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বৃহত্তর কাপড়ের হাট, এনায়েতপুর থানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ হাজার হাজার বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, এখনো ভাঙনরোধে কাজ শুরু হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ৮৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে জিওব্যাগ ফেলা হবে। তিনি আরও জানান, ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় জিওব্যাগ ফেলেও রোধ করা সম্ভব হবে না। স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার জন্য প্রকল্প গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

সর্বশেষ খবর