মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বেহাল গাইবান্ধার পৌর বাস টার্মিনাল

গৌতমাশিস গুহ সরকার, গাইবান্ধা

বেহাল গাইবান্ধার পৌর বাস টার্মিনাল

বেহাল গাইবান্ধার জরাজীর্ণ পৌর বাস টার্মিনালটি। অনেকের মতে, শুধুই গাইবান্ধা পৌরসভার আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটি রক্ষণাবেক্ষণ দেখভাল ও উন্নয়নের কোনো দায়িত্বই যেন তাদের নেই। তেমনি টার্মিনালের জায়গা-জমি অবকাঠামোগত কোনো তথ্যই পৌরসভা সংরক্ষণ করে না। প্রতি বছর পৌরসভা এটি ইজারা দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করেই খালাস। চলতি বছরও তারা (বাংলা ১৪২৭ সন) শৌচাগারসহ এটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা ইজারা দিয়েছেন। বাসযাত্রী, মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টার্মিনালটির বেহাল দশা বহু বছর আগে থেকেই। টার্মিনালের ভিতরের রাস্তা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সবসময় কাদা পানি জমে থাকছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও বাস শ্রমিকরা। বর্ষাকালে ভোগান্তির চিত্র অবর্ণনীয়। ৩৫ বছর আগে তৈরি করা যাত্রী ছাউনিটির এখন ভগ্ন দশা। টার্মিনাল ভবনের দরজা, জানালা ভেঙে গেছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। যাত্রীদের বসবার কোনো জায়গা নেই। নেই টয়লেট। মূল ভবন থেকে কাদা মাড়িয়ে সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন যে টয়লেটে যেতে হয় সেটিও ভাঙাচোরা, অপরিষ্কার ও দুর্গন্ধে ব্যবহার অনুপযোগী। কিন্তু সেটিও পৌরসভা বার্ষিক ২০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছে। আর টার্মিনাল ভবনটিতে টিকিট কাউন্টারগুলো একদিকে ভগ্ন দশায়। যেন কেউ ব্যবহার করছে না। তেমনি বেশির ভাগ কক্ষ শ্রমিক, কন্ডাক্টর, চালকদের বিভিন্ন সমিতি ও সংগঠনের দখলে। আবার গোয়ালঘরের মতো গরু, মহিষ যেমন বেঁধে রাখা হচ্ছে। তেমনি হকারদের ভ্যানসহ নানা সামগ্রী রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে ভবনটি। এই টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন রুটের শতাধিক বাস চলাচল করে। ফলে এখানে প্রতিদিন ৫/৬ হাজার মানুষের সমাগম হয়। নিয়মিত যাতায়াতকারী কয়েজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, নারী যাত্রীরা টয়লেট ব্যবহার নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েন। আর বৃষ্টি বাদলের দিন অপেক্ষা করার মতো কোনো স্থান না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। আশপাশের দোকান ও হোটেলে আশ্রয় নেন যাত্রীরা। গাইবান্ধা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কাজী মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, এটি পৌরসভার আয়ের একটি বড় উৎস হলেও বহুবার পৌরসভাকে টার্মিনালের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েও ফল পাইনি। বেহাল এই টার্মিনালটি একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী। তাই দূর পাল্লার বাসের টিকিট কাউন্টারগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় ভাড়া নিয়ে চালাতে হচ্ছে। কিন্তু পৌরসভা সেখানে গিয়েও বাস প্রতি প্রতিদিন ৫০ টাকা করে টোল আদায় করছে। পাঁচ শতাধিক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী এই অবকাঠামো থেকে কোনো সুবিধাই পাচ্ছে না। কাদাপানির কারণে যাত্রীরাও টার্মিনালের ভিতরে প্রবেশ না করে রাস্তা থেকেই বাসে ওঠানামা করে থাকেন। টার্মিনালটির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গাইবান্ধা পৌরসভায় গেলে সেখানে কোনো তথ্যই মেলেনি। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কতখানি জায়গার ওপর কত টাকায় অবকাঠামো কত সালে তৈরি হয়েছিল। সে বিষয়ে কোনো ফাইল খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসব বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারছি না।

সর্বশেষ খবর