সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বাঁশের সাঁকোতে ভরসা ৬০ হাজার মানুষের

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বাঁশের সাঁকোতে ভরসা ৬০ হাজার মানুষের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে যমুনা খালের উপর সেতু না থাকায় খালের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে চার ইউনিয়নের ১৬ গ্রামের ৬০ হাজারের মতো মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের নানান প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হওয়ার আর প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকে না। এই এলাকার মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কথা দীর্ঘ ৫০ বছরেও কেউ শোনেননি। বাধ্য হয়ে স্কুল শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রছুল্লাবাদ গ্রামের যমুনা খালের উপর নির্মিত এই বিশাল বাঁশের সাঁকো দিয়ে সাতমোড়া, জিনোদপুর ও ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ১৬ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। রছুল্লাবাদ গ্রামের পূর্বপাড়ায় মেঘনা নদীর শাখা ‘যমুনা খালের’ উপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যর নির্মিত বাঁশের উপর কাঠের মাচাল দিয়ে তৈরি এই সাঁকোটি। রছুল্লাবাদ ইউ এ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ২০১৮ সালে রছুল্লাবাদ যমুনার খালে কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু তীব্র স্রোতে সেটি ভেঙে যায়। এতে আরও দুর্ভোগ বাড়ে এলাকাবাসীর। বিভিন্ন সময় বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে বেশকিছু দুর্ঘটনাও ঘটেছে সেখানে। কৃষক আবদুল হামিদ বলেন, যমুনা খালের ওই পাড়ে এই গ্রামের অনেকেরই জমি আছে। কিন্তু নদী পারাপারের অসুবিধার কারণে জমির ফসল বাড়ি আনা যায় না। আমাদের দুর্ভোগ দেখার মতো কেউ নেই।  রছুল্লাবাদের বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস বলেন, এই এলাকার ৬০ হাজার মানুষের চলার একমাত্র পথ হলো যমুনা নদী পার হয়ে করতে হয়। এই জায়গায় সেতু নির্মাণ করতে ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে বহুবারই মাপঝোক করে গেছেন।

কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এই এলাকার মানুষের একটাই দাবি এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোর্শেদ মিয়া বলেন, রাতে এই খালে কোনো নৌকা থাকে না। কিন্তু রাতে বাড়ি যেতে হলে এই বড় খালে সাঁতার কেটে যেতে হয়।

এলাকাবাসীরা জানান, বড় শিকানিকা, ছোট শিকানিকা, পদ্দনগর, কাজেল্লাসহ আরও কয়েক গ্রামের নিজস্ব কোনো হাট না থাকায় তারা সেতু পার হয়েই রছুল্লাবাদ বাজারে এসে দৈনন্দিন চাহিদা মেটায়। রছুল্লবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী আকবর জানান, আমি আগেও কয়েকবার সয়েল টেস্ট করে এলজিইডি দফতরে পাঠিয়েছি। কিন্তু  কোনো কাজ হয়নি। এই যমুনার খালে ব্রিজ না থাকায় মানুষের অনেক ভোগান্তি হয়। উপজেলা প্রকৌশলী অধিদফতরের প্রকৌশলী গ্রেটার অচিরেই কার্যক্রম শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর