রবিবার, ২৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

থোকায় থোকায় দুলছে আম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

থোকায় থোকায় দুলছে আম

আমের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছের থোকায় থোকায় দুলছে রসালো আম। বৃষ্টি না হলে আগামী সপ্তাহেই জেলার বিভিন্ন বাজারে গাছ পাকা আম আসতে শুরু করবে। আগাম জাতের পাকা আমের মিষ্টি সুগন্ধে ভরে উঠবে আমবাজারগুলো। তাই দাম বেশি ও ফলন ভালো পেতে এ সময় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানমালিক ও চাষিরা। আমের ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ ঠেকাতে বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহার করছেন। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতিতেও বেচাকেনা ভালো হবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় আমবাগানের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর এবং গাছের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। গত বছরের চেয়ে এবার জেলায় ৩ হাজার ৩৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এবার আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে আড়াই লাখ মে.টন। সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার আমগাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণ আম ধরেছে। গত কয়েকদিন আগে কয়েকদফা বৃষ্টির সুবাদে আমের আকার অনেকাংশে বড় হয়ে গেছে। বর্তমানে জেলার আমবাগানগুলোতে গুটিজাতের আম বড় হয়ে পরিপক্বতা পেতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে বাজারে গুটিজাতের পরিপক্ব আম বাজারে আসবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত ও ন্যাঙ্গড়া জাতের পরিপক্ব আম অন্তত দু’সপ্তাহ পর বাজারে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম পরিপক্বতা পেতে দেরি হয় অন্যান্য স্থানের চেয়ে। সর্বোপরি আশা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে মধু মাস জ্যৈষ্ঠে বাজারে উঠতে শুরু করবে পাকা আম। আর আমকে ঘিরে ইতিমধ্যে জেলার সদরঘাট ও তহাবাজার, ভোলাহাট, শিবগঞ্জ ও কানসাট আমবাজার এবং রহনপুর বাজারের মোকামগুলো প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। এ অঞ্চলের মানুষ প্রধান অর্থকরী ফসল আমকে ঘিরেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কানসাটের আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী এমদাদুল হক জানান, তার বাগানে এবার বেশির ভাগ গাছে আম এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি। এদিকে কানসাটের আমচাষি নুরুল ইসলাম জানান, দেরিতে আমের গুটি আসলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে। বর্তমানে আম নষ্টকারী ক্ষুদি ও হপার পোকা দমনে বাগানগুলোতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কীটনাশক ও পানি দিচ্ছেন আমচাষিরা। এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে সার্বিক উৎপাদনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। আমের গুটি দেরিতে আসলেও উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে যে তাপমাত্রা তাতে ১ সপ্তাহ আগেও পরিপক্ব গোপালভোগসহ গুটিজাতের আম বাজারে আসতে পারে। চলতি মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

অন্যদিকে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হরিদাস মহন্ত জানান, চলতি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সময়ের ব্যবধানে আমের আকার অনেকটা বড় হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আগাম জাতের গুটি আম বাজারে নামবে এবং সেটি হবে সুমিষ্ট ও সুস্বাদু।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর