বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কালভার্টের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কালভার্টের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করায় স্থানীয় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে। প্রায় এক বছর আগে দুই পাশের সড়কের গোড়ার অংশ থেকে মাটি সরে একটি কালভার্ট হেলে পড়ে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ১ কিলোমিটার অংশের মধ্যে অপর একটি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত পানির চাপে পুরাতন কালভার্ট ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর এলজিইডির দাবি, আঞ্চলিক সড়কের ১ কিলোমিটার অংশে দুটি কালভার্ট রয়েছে। একটি কালভার্টের দুই পাশ বন্ধ করে মসজিদ ও বাড়ি নির্মাণ করায় স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানির চাপে অপর কালভার্টের দুই পাশের মাটি সরে হেলে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, চার বছর আগে ভলাকুট ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের মো. আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি খালের পূর্বপাশ দখল করে ঘর নির্মাণ করেন। স্থানীয়রা একই কালভার্টের পশ্চিমপাশ দখল করে টিনের মসজিদ নির্মাণ করেন। এতে এই কালভার্টের নিচ দিয়ে পানির প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে ১ কিলোমিটার অংশের একই খালের মধ্যে থাকা অপর একটি পুরাতন কালভার্টের নিচ দিয়ে গত বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের চাপ বেড়ে যায়। এতে সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙনসহ পুরাতন কালভার্টের সঙ্গে যুক্ত দুই পাশের সড়কের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। ফলে পুরাতন কালভার্টটি একপাশে হেলে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ওই কালভার্টের ওপর দিয়ে যান চলাচল করছে। যে কোনো সময় কালভার্টটি ধসে পড়তে পারে। স্থানীয়রা জানায়, পুরাতন কালভার্টটি হেলে পড়েছে এবং ধেবে গেছে। যে কোনো সময় কালভার্ট ধসে পড়তে পারে। এতে উপজেলা সদরের সঙ্গে ভলাকুট ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হেলে পড়া ও ধেবে যাওয়া কালভার্টের ওপর দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। আর ভারী যানচলাচল কার্যত বন্ধ থাকায় কৃষকরা ফসল নিয়ে উপজেলা সদরে যেতে পারছেন না। আর শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে সেচকাজও           বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়কে অপর কালভার্টের দুই পাশ থেকে দখল উচ্ছেদের দাবি জানান। উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে নাসিরনগর থেকে সরাইলের অরুয়াইল পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫৮টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করে এলজিইডি। ভলাকুট থেকে চাতলপাড় যেতে কান্দিপাড়া অংশের কালভার্টের দুই দিকের সম্মুখ ভাগে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। ওই কালভার্টের পশ্চিমদিকে স্থানীয়রা একটি মসজিদ ও পূর্বদিকে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করে।

 গত বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানির চাপে ১ কিলোমিটার অংশের মধ্যে থাকা অপর পুরাতন কালভার্টটি হেলে পড়েছে এবং ধেবে গেছে। ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুবেল মিয়া জানান, কালভার্টের দুই পাশ দখল করে ঘর নির্মাণ করেছে আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু উপজেলা এলজিইডি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই ঘরের কারণে বর্ষা মৌসুমে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভলাকুট অংশের শেষ সীমান্তে একটি ছোট ব্রিজ ভেঙে গেছে। সেই ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। অভিযুক্ত আবুল কালামের ছেলে সেজিদ মিয়া বলেন, কালভার্ট দখল করে বাড়ি নির্মাণ করা কথাটা ভুল। আমার বাবা নিজের জায়গায় বাড়ি করছে। সহকারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইছাক মিয়া বলেন, একটি কালভার্টের দুই পাশ দখল করে বাড়ি নির্মাণের কারণে এই অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পিডি স্যার পরিদর্শন করেছে ওই এলাকা। একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই সুফল পাব।

সর্বশেষ খবর