নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজার এলাকায় সরকারি খাস জমি জোরপূর্বক দখল করে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ করছেন বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এলাকার অবৈধ দখলদার হিসেবে পরিচিত এক প্রভাবশালী। এরই মধ্যে ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন তিনি। জেলা প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের বন্দোবস্ত কিংবা অনুমতি ছাড়াই এই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, সরকারি খাস জমি উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে গণস্বাক্ষর সংবলিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা। জানা গেছে, চাঁচুড়ী বাজারের সর্ব উত্তরের গলিপথের পাশ ঘেঁষা ‘পান-সুপারি’র হাট-বাজারের চূড়ান্ত বি এস রেকর্ড পর্যালোচনা অনুযায়ী বাজারের পেরিফেরিভুক্ত ধাড়িয়াঘাটা মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের বি এস ৩৭ নম্বর দাগের প্রায় ২ শতাংশ সরকারি খাস জমির ওপর বহুকাল ধরে চাঁচুড়ী হাট-বাজারের জমি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল। প্রতি হাট-বাজারে ওই জমিতে নানা ধরনের পান-সুপারি বিক্রি হয়। জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি শুক্রবার ছুটির দিনের সুযোগ বুঝে সরকারি খাস জমি কোনো প্রকার বন্দোবস্ত না নিয়ে অবৈধ দখল করে ২ শতাংশ খাস জমির পুরোটাই দখল করে ছাদ দিয়ে একটি মার্কেট নির্মাণ করছেন বাজার কমিটির তথাকথিত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। তিনতলা ফাউন্ডেশনের ওই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। মার্কেটটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে তিনি ভাড়া দেবেন। প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। বাজার কমিটির নির্বাচন ছাড়াই তিনি প্রায় দুই দশক ধরে জোরপূর্বক সাধারণ সম্পাদকের পদে আসীন থেকে বাজারের সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করে খাচ্ছেন। এর আগে তিনি চাঁচুড়ী হাট-বাজারের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে চলা কৃষ্ণপুর-কদমতলা খালের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ ও বাজারের পশ্চিশ অংশের একটি সরকারি খাস জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। সরেজমিন দেখা যায়, দুই শতাংশ সরকারি জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনতলা ফাউন্ডেশনের ওপর বিম ও পিলার বসানোর জন্য বড় বড় গর্ত খোঁড়া হয়েছে। পাশে ইট ভাঙানো মেশিনে ইট ভাঙছে শ্রমিকরা। আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই জমিতে ৬-৭ জন নির্মাণ শ্রমিক ভবন তৈরির প্রাথমিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। চাঁচুড়ী বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী অসিকুর রহমান মোল্যা বলেন, চাঁচুড়ী বাজার কমিটির তথাকথিত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম সরকারি ২ শতাংশ খাস জমির পুরোটাই দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন এখানে পান-সুপারি বিক্রি হয়। অথচ তিনি ও তার সহযোগীরা হাটের এ খাস জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে তিনি ভাড়া দেবেন। এ বিষয়ে চাঁচুড়ী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা বণিক সমিতির অফিস নির্মাণের অনুমতি চেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাছে আবেদন করেছি। অনুমতি এখনো পাননি। তাহলে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করলেন কীভাবে- এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ জমি বন্দোবস্তের জন্য একাধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। কাউকে এখনো বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এর পরেও যদি কেউ অবৈধভাবে সরকারি ভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেন। তাহলে বিধি মোতাবেক উচ্ছেদ করা হবে।