বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সেতু ভেঙেছে পাঁচ বছর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সেতু ভেঙেছে পাঁচ বছর

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ইউনিয়নের ধরলার শাখা নদী চেনাকাটার ওপর নির্মিত সেতু পাঁচ বছর আগে ভেঙে গেছে। বন্যায় এর দক্ষিণ অংশ দেবে গিয়ে বাঁকা ও উঁচুনিচু অবস্থায় পড়ে আছে। উত্তর অংশটিও কাত হয়ে সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। এ অবস্থা হওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। সরেজমিন দেখা গেছে, জগৎবেড় ইউনিয়নের দেওদাপাড়া গ্রামের চেনাকাটা শাখা নদীর ওপর স্থাপিত পিসি গার্ডার সেতু বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এটি পাঁচ বছরেও সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে ওই সেতু দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে সেখানকার ১৫ গ্রামের লাখো মানুষের নিত্যদিনের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী পারাপার ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের দিকে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় এর উত্তর অংশ দেবে সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বন্যায় সেতুর দক্ষিণ অংশও কাত হয়ে সংযোগ সড়ক থেকে আলাদা হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসী সেতুর উভয় অংশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে চলাচলের উপযোগী করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুর উত্তর ও দক্ষিণাংশে অন্তত ১৫ গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদরাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ে পড়ুয়া স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এ সেতু দিয়ে চলাচল করে। এ সেতু দিয়ে জগৎবেড় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করলে সময় এবং অর্থ কম লাগে। নইলে তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ৫ হাজার পরিবার বিপাকে পড়েছে। কচুয়ারপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবুজ ইসলাম বলেন, এ সেতুটি আমাদের সবার প্রয়োজন। অনেক ছাত্রছাত্রী কষ্ট করে চলাচল করে। বর্তমানে নদীতে পানি কম, বর্ষার সময় কষ্ট ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।

জগৎবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ডের সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ে থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষক, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের খুব সমস্যা হচ্ছে। বর্ষার সময় সবার কষ্ট বেড়ে যায়। উপজেলা প্রকৌশল দফতরে জানানো হয়েছে। জগৎবেড় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসীসহ অন্যান্য গ্রামের মানুষের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সেতুটির নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন । স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব-উল আলম বলেন, ওই স্থান ও নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। মাটি পরীক্ষা, নকশাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রক্রিয়াধীন। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঠিকাদার নিয়োগ হলে কাজ শুরু করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর