গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার এক যুবক গতকাল দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন। এদিকে চোরের ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ী ও গণপিটুনিতে অপর এক যুবক আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাঞ্চনপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকায়। নিহতের নাম বকুল মিয়া। আহতরা হলেন- সোহেল রানা ও লিটন। সোহেল রানা ‘স’ মিল ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে উপজেলা কাঞ্চনপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সোহেল রানার বাড়ি থেকে তিনটি গরু চুরি করে চোরচক্র। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর বাবা রফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গত রবিবার গভীর রাতে পাশের নিশ্চিন্তপুরে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকার মিজু মিয়ার বাড়িতে গরু চোর ধরা পড়েছে বলে শোনেন সোহেল। পরে তিনি একটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে রওনা হন। যাওয়ার পথে বড়চালা এলাকায় পৌঁছালে রাস্তার পাশে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হলে মোটরসাইকেলটি থামান। এ সময় তার পরিচয় জানতে চাইলে সে নানা গড়িমসি করতে থাকে। একপর্যায়ে সে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে চোর সন্দেহে তাকে ধরার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ী সোহেল। এ সময় তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে সোহেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সোহেলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ধাওয়া দিয়ে ওই যুবককে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে খবর দেন। ওই রাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় ব্যবসায়ী সোহেলকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে গণপিটুনির শিকার যুবক বকুল মারা যান। অপর দিকে একই রাতে পাশের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় চোর সন্দেহে অপর যুবক লিটনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। কালিয়াকৈর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল বাশার জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত যুবক বকুল মারা গেছেন। অপর যুবক লিটন ও ব্যবসায়ী সোহেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।