শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে শীতবস্ত্রের চড়া দাম

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে শীতবস্ত্রের চড়া দাম

হাড় কাঁপানো শীত, দাপট দেখাচ্ছে উত্তরের জনপদে। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে কাবু লালমনিরহাট জেলার মানুষ। হিমালয় ঘেঁষা উত্তরাঞ্চলের এই জেলায় তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। কোনো কোনো দিন সূর্যের আলোর দেখাই মিলছে না এ অঞ্চলে। অব্যাহত শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য মানুষজন ছুটছেন গরম পোশাকের দোকানে, উষ্ণতার খোঁজে। আবার কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষরা। শীত নিবারণে তারা ছুটছেন পুরাতন পোশাকের দোকানে। কিন্তু এ বছর পুরাতন পোশাকের দাম বেশি, তবুও বাধ্য হয়ে তাদের চড়া দামেই পুরনো শীতবস্ত্র কিনতে হচ্ছে। জেলার স্টেশন রোড, বিডিআর হেট, আলোরুপা মোড়, সাপটানা এলাকার ফুটপাতে পুরাতন পোশাকের দোকানগুলো ঘুরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ভিড় দেখা যায়। ক্রেতাদের মধ্যে কেউ পোশাক পরে দেখছেন, কেউবা দর কষাকষি করছেন, আবার অনেকেই অন্য দোকানে ছুটছেন। বিক্রেতারাও পোশাক বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মনিরুজ্জামান নামে এক ক্রেতা জানান, কম দামে একটু ভালো মানের গরম খুঁজছি। কিন্তু এসে দেখি প্রত্যেক পোশাকেরই দাম বেশি। তবুও ৫৬০ টাকায় একটা জ্যাকেট কিনলাম। কথা হয় রিকশাচালক হেলাল মিয়ার সঙ্গে তিনি বলেন, এবার ঠান্ডায় হাত-পা অবস হয়ে যাচ্ছে, তাই ফুটপাতের দোকানে আসছি কাপড় কিনতে। কিন্তু এ বছর কাপড়ের দাম বেশি, দরদাম করছি আমার কাছে যে টাকা তাতে একটু ভালো মানের গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানগুলোতে ঘুরছি, যে দোকানে কম দাম পাব সেখান থেকেই কিনব। দইখাওয়া এলাকার খাইরুল ইসলাম বলেন এবার গরম পোশাকের যা দাম, তাতে গরিবের পক্ষে এবার শীতের পোশাক কেনা সম্ভব নয়। তবুও দেখি পরিবারের সদস্যদের জন্য কোনো পোশাক কিনতে পারি কি না। আদিতমারী উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের মনছুর আলী, আলেয়া খাতুনসহ অনেকেই জানিয়েছেন, হামার এদিক খুব ঠাণ্ডা। এই ঠাণ্ডায় ঘর থাকি বেড়ার মান চায় না। দুই দিন ধরি কাজতও যাই না। যে শীত কবে যে যায়। এই শীতে কষ্টে আছি। ব্যবসায়ী আইয়ব আলী বলেন, দোকানে যে পুরাতন পোশাকগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এবার ডলারের দাম বেশি তাই পোশাক আনতেও আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আমরা চাইলেও কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারছি না। সবমিলেয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম বেশিতেই কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফয়সাল আহম্মেদ নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি গরম পোশাকের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি। গত বছর যে সোয়েটার বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, এবার সেই একই রকমের সোয়েটার ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এভাবেই জ্যাকেট, ট্রাউজার, কম্বলসহ অন্যান্য গরম পোশাকের দামও বেশি। তবে দাম বেশি হলেও শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ভালোই বিক্রি হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত জেলার ২৫ হাজার ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর