রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধা মাকে বাড়িছাড়া করল ছেলে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জ শহরে সম্পত্তির লোভে আঙ্গুরা খাতুন (৭১) নামে এক বৃদ্ধ মাকে নির্যাতন করে বাড়ি ছাড়া করেছে পুত্র ও পুত্রবধূ। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার না পেয়ে মানুষের বাসা বাড়িতে কদিন কাটানোর পর অবশেষে ওই বৃদ্ধ নারীর ঠাঁই মিলেছে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বৃদ্ধ নারী আঙ্গুরা খাতুনকে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখা হচ্ছে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও খাবার। বৃদ্ধ নারী আঙ্গুরা খাতুন হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকার মৃত জিতু মিয়ার স্ত্রী। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ আঙ্গুরা খাতুন জানান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ছেলে মো. ফরিদ মিয়া ও তার স্ত্রী আমার ভরণ-পোষণ না দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। আমার শেষ সম্বল স্বামীর বসত ভিটাটুকুও সে প্রতারণা করে নিজের করে নিয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি আমাকে ঘর থেকে তারা বের করে দিয়েছে।

বিষয়টি স্থানীয় ময়মুরব্বিয়ানদের জানালেও তারা তাতে কর্ণপাত করছে না। ফলে বাধ্য হয়ে আমাকে ভিক্ষাবৃত্তি করে দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগার করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আমি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার অসুস্থতা দেখে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আঙ্গুরা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে আমার পুত্রের বিরুদ্ধে আমি হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। জানতে চাইলে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, ওই বৃদ্ধ নারীর অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তের পরই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার জানান, আঙ্গুরা খাতুন নামে ওই বৃদ্ধ নারী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও খাবার দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারা তার খোঁজখবর রাখছেন। হবিগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সিতু জানান, বিষয়টি আমরা একাধিকবার স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখনো খোঁজখবর নিয়ে দেখছি ওই বৃদ্ধ আঙ্গুরা খাতুনকে তার পরিবারের কাছে দেওয়া যায় কি না। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি তার ছেলের সঙ্গে কথা বলছি। প্রবীণ হিতৈষী সংঘ হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, এ ঘটনাটি মর্মান্তিক। এ বয়সে এসে একজন মাকে এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকতে হবে তা কাম্য নয়। আমরা চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হউক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর