শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় উধাও সেতুর ঠিকাদার ভোগান্তিতে তিন জেলার মানুষ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে তা শেষ না করেই উধাও হয়ে গেছেন ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লোকজন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো অর্ধেকের বেশি কাজ বাকি রয়ে গেছে। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কুষ্টিয়াসহ তিন জেলার মানুষ। ২০২১ সালের ১২ মার্চ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিত্তিপাড়া ও ঝাউদিয়া সড়কে মরা নদী ওপর প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে জেডি নামে পাবনার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শেষে সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় অর্ধেকের বেশি কাজ বাকি রয়ে গেছে। চারটি পিলারের আংশিক ও দুই তীরে কিছু কাজ করে যন্ত্রপাতি ফেলে চলে গেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এর ফলে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুসহ কুষ্টিয়া সদরের সাতটি ইউনিয়নের মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে এ অঞ্চলের বাস চলাচল। অন্যদিকে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট-বড় যানবাহন। স্থানীয় এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়েক দফা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নোটিস করার পর তারা নামমাত্র কাজ শুরু করে। কিন্তু কয়েক দিন কাজ শুরু করার পর ভেকু মেশিন ফেলে রেখে উধাও হয়ে যান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এর পর বছর খানেক তাদের আর কোনো খোঁজ-খবর নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই পাশে নামমাত্র কিছু কাজ হয়েছে। তবে মূল অবকাঠামো নির্মাণের কোনো কাজ হয়নি। এক সময় এ সড়ক দিয়ে কুষ্টিয়া হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু পর্যন্ত বাস চলাচল করত। কিন্তু সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় প্রায় দুই বছর ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাসহ তিনটি জেলার মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম উদ্দিন জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে স্থানীয়দের পাশাপাশি পাশের দুটি জেলার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার তারা সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার অনুরোধ জানালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। কাজটির ঠিকাদার নুরুজ্জামান মিয়া জানান, কার্যাদেশ পাওয়ার পর হঠাৎ নির্মাণ সামগ্রীর দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় সমন্বয় করা যাচ্ছে না। যে কারণে আমরা নির্ধারিত সময়ে কাজটি সম্পন্ন করতে পারিনি। তার পরও জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কাজটি শেষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যে কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সময় বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই কাজটি পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে এলজিইডি কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান মন্ডল জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নানা অজুহাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি শেষ করতে গড়িমশি করছে। সর্বশেষ তাদের জুন মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। যদি বেঁধে দেওয়া এ সময়ের মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সর্বশেষ খবর