রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুশ্চিন্তায় পাবনার পিঁয়াজ চাষিরা

পাবনা প্রতিনিধি

দুশ্চিন্তায় পাবনার পিঁয়াজ চাষিরা

সুজানগরে পিঁয়াজের হাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আগাম জাতের পিঁয়াজের বাম্পার ফলনেও মন ভালো নেই পাবনার চাষিদের। তাদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারমূল্য কম। লোকসান ঠেকাতে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ এবং কৃষক পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট বাজারমূল্য নির্ধারণের দাবি তাদের। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত বছর পাবনায় প্রায় ১ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন মুড়িকাটা পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা জাতের পিঁয়াজ আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম জানান, অক্টোবর-নভেম্বরে মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষ হয় এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বাজারে আসে। চারা পিঁয়াজ ওঠার আগ পর্যন্ত মুড়িকাটা দেশের আপৎকালীন চাহিদা মেটায়। চলতি মৌসুমে উৎপাদন সহায়ক আবহাওয়ায় বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ গড় ফলন পেয়েছেন চাষিরা। পাবনায় এ পিঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন, যা ইতোমধ্যেই অর্জিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমের চারা জাতের পিঁয়াজ ইতোমধ্যেই ৫০ শতাংশ জমি থেকে তোলা হয়েছে। এখনো মাঠে যে পরিমাণ পিঁয়াজ আছে তাতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ফলন ভালো হলেও পিঁয়াজ বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। তারা জানান, প্রথমদিকে, প্রতি মণ পিঁয়াজে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা পেলেও সরবরাহ বাড়ায় হঠাৎই কমে গেছে দাম। দেশের অন্যতম বৃহৎ পিঁয়াজের হাট পাবনার সুজানগরে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক-ব্যাপারীদের দরকষাকষি, ওজন করা, কুলির হাঁকাহাঁকি, পরিবহন শ্রমিকদের ভিড়ে জমজমাট বাজার। ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১০০ টাকা মণ দরে পিঁয়াজ বেচাকেনা হচ্ছে। অথচ ১০ দিন আগেও ছিল ১২০০-১৩০০ টাকা মণ। এখান থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পিঁয়াজ যাচ্ছে। সুজানগর উপজেলার মালিফা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, গত বছর এ সময় এক মণ মূলকাটা পিঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। এবার তা পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১১০০ টাকায়। মুড়িকাটা পিঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ করা যায় না তাই দাম না পেলেও চাষিরা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

ব্যবসায়ী আজমত হোসেন বলেন, বাজারে পিঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। বড় পাইকারদের কাছে এখনো আমদানি করা পিঁয়াজের মজুদ রয়েছে। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কম। কৃষকের স্বার্থে পিঁয়াজের মৌসুমে আমদানি বন্ধ করা প্রয়োজন। উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাজারমূল্য নির্ধারণের দাবিও জানান তিনি। পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সাইফুল আলম বলেন, সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কিছুটা কম। ফলন বেশি হওয়ায় পিঁয়াজের বর্তমান বাজার দরেও কৃষকের লোকসান হবে না। এ বছর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং পিঁয়াজ চাষে কৃষকদের সক্ষমতা বাড়ায় তারা লাভবান হবেন।

সর্বশেষ খবর