শিরোনাম
শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বগুড়ায় হাজার কোটি টাকার লাল মরিচের বাজার

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় হাজার কোটি টাকার লাল মরিচের বাজার

বগুড়ায় মরিচ পরিচর্যায় ব্যস্ত নারী শ্রমিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার বিভিন্ন বাড়ির উঠান, ফাঁকা জায়গা সর্বত্র লাল মরিচের ছড়াছড়ি। মরিচ চাষিরাও স্বপ্ন দেখছেন আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার। ইতোমধ্যে মরিচ বাজারে সরবরাহ শুরু করেছেন তারা। আর্থিক দিক থেকে জেলার সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্য লাল মরিচের বাজার এখন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্য ঘিরে যমুনা নদীপাড়ের অসচ্ছল চাষিরা সচ্ছল হওয়ার সংগ্রামে নেমেছেন।বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। বারবার ভাঙনে নদীপাড়ের মানুষগুলো হয়েছে সর্বস্বান্ত। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও নিজেদের টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা মরিচ চাষে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন। সারিয়াকান্দির চাষিরা বলছেন, যমুনার চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক মরিচ আবাদ হয়েছে। বন্যার সময় চরাঞ্চলের পলি পড়া উর্বর জমিতে ফলন হয়েছে ভালো। সারিয়াকান্দি ছাড়াও বগুড়া সদর, সোনাতলা, শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় মরিচ চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি মরিচ উৎপাদন হয় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের চর এলাকায়। কৃষকের খেত আর আঙিনাজুড়ে এখন শুধু মরিচ আর মরিচ। সারিয়াকান্দি মরিচের উৎকৃষ্ট মান ভালো হওয়ায় দেশব্যাপী চাহিদা রয়েছে। ফলে এখানে উৎপাদিত মরিচের দামও একটু বেশি। সারিয়াকান্দির চাষিরা তাদের উঠান, নদীর তীর, বাড়ির আঙিনায় রোদে মরিচ শুকিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ বাজারে শুকনা মরিচ বিক্রি শুরু করেছেন। এ জেলায় সারা বছর মরিচের আবাদ হলেও অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত যে মরিচ চাষ হয় তা শুকিয়ে বাছাই করা হয়। বছরের অন্য মাসে যে মরিচ উৎপাদন হয় তা সাধারণত কাঁচা হিসেবে বিক্রি হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বগুড়ায় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর। গত বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এ পরিমাণ জমি থেকে ফলন পাওয়া যায় ১৮ হাজার ৬০০ টন। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ জমি থেকে ফলন পাওয়া গেছে প্রায় ৮ হাজার টন। এ পর্যন্ত মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৪০ কোটি টাকার। বাম্পার ফলন হওয়ায় শেষ পর্যন্ত এ প্রায় ১৯ হাজার টনে দাঁড়াবে। সেই হিসাবে মৌসুমের শেষনাগাদ মরিচ বিক্রি হবে হাজার কোটি টাকার বেশি। বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মরিচ গাছ থেকে তোলা, শুকানো ও বাছাই করতে শত শত নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন।

সর্বশেষ খবর