শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুবিধাবঞ্চিত গাইবান্ধা পৌরবাসী

গৌতমাশিস গুহ সরকার, গাইবান্ধা

সুবিধাবঞ্চিত গাইবান্ধা পৌরবাসী

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শহরের পুরাতন জেলাখানা এলাকার গণশৌচাগার

শতবর্ষে পদার্পণ করেছে গাইবান্ধা পৌরসভা। শত বছরে পৌরবাসীর ভাগ্যে সুযোগ-সুবিধা তেমন জোটেনি বরং দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে। রাস্তা, ড্রেন, ফুটপাথ, বর্জ্য, শৌচাগার, জলাবদ্ধতা, শার উপদ্রব এখানকার নাগরিকদের নিত্যসঙ্গী। পৌরসভার মূল্যবান প্রায় চার একর জায়গা বেদখল থাকলেও তা উদ্ধার করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

গাইবান্ধা পৌরসভার আয়তন ১০ দশমিক ৫৪ বর্গকিলোমিটার। পৌরসভার তথ্যমতে, এখানে সড়ক রয়েছে ৫৫ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার। এর অর্ধেকের বেশি কাঁচা। মোট ড্রেনের দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। এর মধ্যে মাত্র ১২ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন। সামান্য বৃষ্টিতে শহরে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। বর্ষা মৌসুমে বসতবাড়ি থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার রাস্তা এবং প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে। আবার সড়কের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফুটপাথ হকার ও দোকানিদের দখলে চলে যাওয়ায় পথচারীরা পড়েন বিপাকে। শহরজুড়ে ডাস্টবিনের অভাব প্রকট। ফলে যে যেখানে ইচ্ছা ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল হক জানান, এক সময় প্লাস্টিকের ডাস্টবিন পরে ঝুড়ি দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো এখন উধাও। তিনি বলেন, পাকা ডাস্টবিন করতে চাইলে দুর্গন্ধের দোহাই দিয়ে এলাকার লোকজন বাধা দেন। অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কাজে শহরে আসা মানুষের জন্য নেই যথাযথ শৌচাগারের ব্যবস্থা। যদিও পৌরসভার হিসাবে শহরে সাতটি গণশৌচাগার দেখানো হয়। পৌরপার্ক ও পুরাতন জেলখানা সংলগ্ন শৌচাগার ছাড়া আর কোনোটি মানুষের নজরে আসে না। পুরাতন জেলখানা সংলগ্ন শৌচাগারটির পরিত্যক্ত পড়ে আছে দীর্ঘদিন। তিনটি বাজারে তিনটি শৌচাগার থাকলেও দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশে তা ব্যবহার অনুপযোগী। বাংলাবাজার এবং ঘাঘট লেক এলাকায় নতুন শৌচাগার নির্মাণ করা হলেও শহর থেকে দূরে হওয়ায় তেমন কাজে আসছে না। শহরজুড়ে মশার উপদ্রবে জনজীবন অতিষ্ঠ। মশক নিধনের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ পৌরসভা নেয় না বলে অভিযোগ আছে। পৌর মেয়র বলেন, মূলত আর্থিক সংকটের কারণে মশক নিধন কার্যক্রম নিয়মিত করা যাচ্ছে না। বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব চরমে উঠেছে। বিশেষত শিশু ও নারীরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কুকুর বন্ধ্যাকরণ ও ভ্যাকসিনেশনের জন্য প্রাণী বিভাগ থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় বিপণিবিতান বা মার্কেটে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যানবাহন সড়কের ওপর রাখায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পৌরসভা ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইকের লাইসেন্স দিচ্ছে অবাধে। নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় যেখানে-সেখানে এগুলো দাঁড় করানোয় যানজট বাড়ছে। পৌর মেয়র মতলুবর রহমান বলেন, জার্মান অর্থায়নে আরবান ক্লাইমেট রেসিলিয়ান্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া বাস টার্মিনাল উন্নয়ন ও বর্ধিতকরণ এবং স্টেডিয়ামের পাশের লেকটির সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। মেয়র বলেন, বিভিন্ন প্রকল্প আনার চেষ্টা চলছে। প্রকল্প পেলে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ও সেবার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর