শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাওরে শ্রমিক সংকটে ধান কাটা ব্যাহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হাওরে শ্রমিক সংকটে ধান কাটা ব্যাহত

হবিগঞ্জে ধান কাটায় ব্যস্ত কয়েকজন শ্রমিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

হবিগঞ্জের হাওরে চলছে বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুম। বৈশাখের শুরুতে ধান কাটা শুরু হলেও এখনো বিস্তীর্ণ হাওরজুড়ে দোল খাচ্ছে পাকা ধান। শ্রমিক সংকটে ধান কাটা ব্যাহত হচ্ছে এমন দাবি কৃষকের। ফলে সময় মতো স্বপ্নের ধান গোলায় তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। স্বল্প সংখ্যক যে পরিমাণ শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও মুজরি নিচ্ছেন অতিরিক্ত। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, হাওরে ধান কাটা শ্রমিকের কোনো সংকট নেই। যদি কোনো কৃষক শ্রমিক না পান তাহলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, এবার জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তবে ধান গোলায় তোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকটের কারণে। বাইরে থেকে পর্যাপ্ত শ্রমিক না আসায় সংকট আরও বেড়েছে। বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হাওর ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ জমিতে ধান পাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে কাটতে পারছেন না কৃষকরা। যেসব জমিতে ধান কাটা হচ্ছে সেখানেও নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক। কৃষকরা বলছেন, এবার আগাম বন্যায় ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা না থাকলেও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হলে ধানের ক্ষতি হতে পারে। এতে পাকা ধান ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। কৃষক আবদুল হান্নান বলেন, আরও এক সপ্তাহ আগে আমার জমির ধান পেকেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় ধান কাটতে পারছি না। তিনি বলেন, জেলায় বাইরে থেকে এবার পর্যাপ্ত শ্রমিক না আসায় সংকট বেড়েছে। কৃষক ছানাউর রহমান বলেন, এক মণ ধান দিয়েও একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শাহ রামিম বলেন, উঁচু জমিতে হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা গেলেও নিচু জমির ধান শ্রমিক দিয়ে কাটতে হচ্ছে। শ্রমিকরা অতিরিক্ত মুজরি নিচ্ছেন। শ্রমিক সংকট থাকায় বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে।

নেত্রকোনায় ধান কাটার ধুম : নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, জেলার হাওরাঞ্চলের একমাত্র বোরো ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত কৃষক। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর সবাই প্রচ- গরম উপেক্ষা করে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। কৃষকরা জানান, গরমসহ ঝড়-বৃষ্টিতে কিছু ফসল নষ্ট হলেও বড় ধরনের দুর্যোগ না হওয়ায় সিংহভাগ ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি তারা। কৃষি বিভাগ বলছে, আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এ পর্যন্ত (২৬ এপ্রিল) হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারে ইতোমধ্যে ৮৫ ভাগেরও বেশি ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। ফলে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়নি। জেলায় এবার ১১ লাখ ৫৬ হাজার ১৬২ টন বোরো ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।

সর্বশেষ খবর