গাজীপুরে মাদকাসক্ত ছেলেকে খুনের ঘটনায় পিতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতের নাম মো. ওমর ফারুক ওরফে সবুজ (৬০)। তিনি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানার কানুহারীর মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। গত রবিবার রাতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানাধীন কান্দুরা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, মামলার বাদী নিহতের মা মোছা. দিলুয়ারা আক্তার ওরফে আঙ্গুরা সপরিবারে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন বানিয়ারচালা উত্তরপাড়ায় ভাড়া থাকতেন। তার বড় ছেলে আশরাফুল আলম (৩৩) এক উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। সে ৭-৮টি বিয়ে করেছে। সব সময় নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে বাসায় এসে পুনরায় নেশা করার জন্য মা-বাবার কাছে টাকা-পয়সা দাবি করত। টাকা-পয়সা না দিলে বাবা-মাকে প্রায় সময়ই শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করে আসছিল। ৫ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছেলে আশরাফুল আলম স্থানীয় বাজার থেকে একটি ধারালো চাপাতি কিনে আনে। বাসায় এসে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য তার বাবার কাছে ৭ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চাপাতি দিয়ে মা ও বাবাকে খুনের হুমকি দেয়। ৬ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিহতের মা তার স্বামীকে ফোন করে দ্রুত ঘরের বাইরে আসতে বলে। পরে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা বাঘেরবাজার বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখানে তার স্ত্রীকে জানান, তিনি তার ছেলেকে চাপাতি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের মা দিলুয়ারা আক্তার ওরফে আঙ্গুরা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পিতাকে পিবিআই গ্রেফতার করে। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ঘটনায় জড়িত এজাহারনামীয় একমাত্র আসামি ওমর ফারুক ওরফে সবুজ ও ভিকটিম আশরাফুল সম্পর্কে পিতাপুত্র। মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার, নির্যাতন সইতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে পিতা তার ঔরসজাত সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছে।
