শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

কোটি টাকার যন্ত্রাংশ অকেজো হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

কোটি টাকার যন্ত্রাংশ অকেজো হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিরামচড় এলাকায় ২০ বছর আগে গড়ে তোলা হয় একটি আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল খামারটি থেকে বাচ্চা উৎপাদন। কিন্তু খামারটি চালুর কয়েক বছর পরই নানা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চা উৎপাদন। আর এতে বছরের পর বছর ধরে নষ্ট হচ্ছে বাচ্চা ফুটানোর ইনকিউবেটর ও জেনারেটরসহ নানা সরঞ্জামাদি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগিরই যন্ত্রাংশ মেরামত করে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন শুরু হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেকার লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কোটি টাকা ব্যয় করে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন করে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। ২০০৩ সালে খামারটি স্থাপন করা হলেও কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। এর পর মাত্র ৩ বছর সেখানে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে নানা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চা উৎপাদন। যদিও পরবর্তীতে খামারটি পুনরায় সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালের শেষ দিকে ৩ একর জায়গাজুড়ে খামারটি সম্প্রসারণ করা হয়। নির্মাণ করা হয় একটি অফিস ভবন, হ্যাচারি ভবন, স্টোর ভবন, ডরমেটরি ভবন, পাম্প হাউস, ৮টি ব্রুডার, গ্রোয়ার ও লেয়ার শেড এবং গ্যারেজ ও নাইটগার্ড রুম। সেই সঙ্গে এখানে স্থাপন করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের দুটি বাচ্চা ফুটানোর ইনকিউবেটর। ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। কার্যক্রম শুরু হলেও শুরু হয়নি বাচ্চা উৎপাদন। নামে মাত্র প্রায় হাজার খানেক হাঁস পালন করা হচ্ছে সেখানে। যা থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০০ পিস ডিম। স্থানীয়দের অভিযোগ, খামারটি থেকে ন্যায্যমূল্যে ডিম গ্রামবাসীকে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন করেছিল তার কোনো সুফল মেলেনি। এদিকে শুধু বাচ্চা ফুটানোর ইনকিউবেটর ও জেনারেটর নয়, দিনের পর দিন বছরের পর বছর ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শেডগুলো। স্থানীয় লোকজন জানান, সরকার সাধারণ গ্রামবাসীসহ বেকার লোকদের কর্ম সৃষ্টির লক্ষ্যে এটা স্থাপন করে দিয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রকল্পটি বিন্দুমাত্র আলোর মুখ দেখেনি। এখান থেকে ন্যায্যমূল্যে ডিম পাওয়ার কথা থাকলেও চাহিদা মতো তাও দিতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে খামারটির কার্যক্রম চালু না থাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ভেঙে পড়ছে শেডের বিভিন্ন স্থানের দরজা জানালা। এ ছাড়াও শেডগুলোর চারপাশে জন্মাচ্ছে আগাছা।

যে কারণে পরিণত হচ্ছে জঙ্গলে। তাদের দাবি, অচিরেই যেন সব সমস্যার সমাধান করে সৃষ্টি করা হয় কর্মসংস্থানের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন ম ল জানান, মূলত জনবল সংকটের কারণে বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে জনবল পদায়ন করা হয়েছে। যন্ত্রাংশ মেরামত করে শিগগিরই হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর