শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
দিনাজপুরে ফলের বাজারজাত

বাঁশের খাঁচা-টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত মাহালি সম্প্রদায়

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বাঁশের খাঁচা-টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত মাহালি সম্প্রদায়

চলছে মধুমাস। এ মাসে থেকে বিভিন্ন ফলের সমাহার। বিশেষ করে দিনাজপুর অঞ্চলের দেশের সেরা লিচু, আম এর সমাহার। আর এই মৌসুমে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কদর বাড়ে বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরির। ফল পরিবহনে ব্যবহৃত বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে দিনাজপুরের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাহালি জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা। শুরুতে চাহিদা কম থাকলেও আম-লিচু পাকার সঙ্গে বেড়ে যায় ঝুড়ি কেনার চাহিদা। মাহালিপাড়ায় তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ঝুড়ি তৈরির কাজ। যদিও এসব হারাতে বসেছে বিকল্প প্লাস্টিকের ঝুড়ি বা ক্যারেট বাজারে আসায়। তবে সহজ ব্যবহারযোগ্য দাম কম বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরির প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই দেশ সেরা লিচু, আমসহ ফলের বাজারজাতকরণে এই ঝুড়ি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। মধু মাসে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে অনন্য স্বাদের টসটসে লাল দিনাজপুরী লিচু, আমসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল। এ কারণে এখন বাঁশের টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে দিনাজপুরের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাহালি জনগোষ্ঠী। ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুর পৌর এলাকার কসবা আদিবাসীপাড়া, বিরামপুর পৌর এলাকার চাঁদপুর মাহালিপাড়াসহ কয়েক গ্রাম, ফুলবাড়ীর দৌলতপুর ইউপির জয়নগর গ্রামের মাহালি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা। তাদের এখন চলছে মৌসুম। মাহালি সম্প্রদায়ের লোকজন এখনো কমবেশি সবাই বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী পেশা ধরে রেখেছেন। বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ঝুড়ি, ডালা, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, চালুনি, মাছ রাখার খলইসহ নানান জিনিস তৈরি করেন তারা। দিনাজপুরের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাহালি জনগোষ্ঠী তৈরি করে এসব খাঁচা বা টুকরি। কসবা আদিবাসীপাড়ার পুষ্প মারান্ডি, অজিত মারান্ডি, জয়নগর মাহালিপাড়ায় স্টেফান সরেন ও তার স্ত্রী মিনা মার্ডি, দাউদ হাসদা, বিরামপুর পৌর এলাকার চাঁদপুর মাহালিপাড়ার কমল হেমরমরা বংশ পরম্পরায় ব্রিটিশ আমল থেকেই এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। জেলার অন্য স্থানের মাহালি সম্প্রদায়ের লোকজনও এসব জিনিস তৈরি করেন। কসবা আদিবাসীপাড়ার কারিগর অজিত মারান্ডি জানান, তিন ধরনের খাঁচা তৈরি করেন তারা। এক হাজার লিচু ধারণের খাঁচা ১৫০ টাকা, ৫০০ লিচু ধারণের খাঁচা ৬০ টাকা আর ৩০০ লিচু ধারণের খাঁচা ৫০ টাকা করে বিক্রি করেন। এখানে ২০টিরও অধিক পরিবার এই বাঁশ শিল্পের উপরে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিদিন গড়ে ১০টি ছোট বড় খাঁচা তৈরি করতে পারে প্রতিজন কারিগর। খাঁচা তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত বাঁশটি প্রথমে কেটে শুকানো হয়।

 

সর্বশেষ খবর