শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভুতুড়ে অবস্থা সেতাবগঞ্জ চিনিকলে

খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

ভুতুড়ে অবস্থা সেতাবগঞ্জ চিনিকলে

চিনিকলের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর ট্রলিতে লতাপাতা পেঁচিয়ে পরিণত হয়েছে জঙ্গলে

দিনাজপুরের একমাত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান সেতাবগঞ্জ চিনিকল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসান নিয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে এক সময়ের কর্মচাঞ্চল চিনিকলটিতে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। বোচাগঞ্জের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ে চিনিকলটির আখ মাড়াই চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন। কেননা চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ হওয়ায় এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও দেখা দিয়েছে মন্দা ভাব। চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ থাকায় মূল্যবান যন্ত্রাংশ ও আখ আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর, ট্রাক্টরের ট্রলি খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। ট্রাক্টর এবং ট্রাক্টরের ট্রলিতে আগাছা জন্মে পরিণত হয়েছে জঙ্গলে। এ জঙ্গলের ভিতর পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। একই অবস্থা চিনিকলের কেন ক্যারিয়ারটির। অযতেœ অবহেলায় যেন সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, ১৯৩৩ সালে তৎকালীন জমিদার আবাদি জমি ও শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের আবাসনসহ ৩৮ হাজার ৬০ একর জমি দিয়ে নির্মাণ করেন সেতাবগঞ্জ চিনিকল। নিজস্ব জমি ও সাধারণ কৃষকের রোপণ করা আখ দিয়ে তখন বছরে ৩ মাস থেকে ৪ মাস আখ মাড়াই করত কলটি। এরপর বয়সের ভারে অনেকটাই অকেজো হয়ে পড়ে এবং আখ মাড়াইয়ের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। পরে পুরনো চিনিকলটির পাশে আধুনিক নতুন একটি চিনিকল নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৭ জানুয়ারি নতুন চিনিকল উদ্বোধন করেন এইচ এম এরশাদ। ৩৮ বছর পর ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের ছয়টি চিনিকলের সঙ্গে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের আখ মাড়াই বন্ধ করে দেয় বর্তমান সরকার। চিনিকলের প্রায় ৭৫০ শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার মধ্যে বর্তমানে নিয়োজিত আছেন মাত্র ১০০ জনের মতো। বাকি শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্ন চিনিকলে বদলি হয়ে কাজ করছেন। এ ব্যাপারে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, অন্য মিলের চাহিদাপত্র এলে এসব ট্রাক্টর আমরা সেখানে পাঠিয়ে দেব। ট্রাক্টর ও ট্রলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উন্নত কোনো ব্যবস্থা নেই বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর