বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাস অনুপযোগী পাটগ্রামের গুচ্ছগ্রাম ঘর ছেড়েছে ৮২ পরিবার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বাস অনুপযোগী পাটগ্রামের গুচ্ছগ্রাম ঘর ছেড়েছে ৮২ পরিবার

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের আবাসন প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেশির ভাগ ঘরের মেঝের মাটি ধসে গেছে। ধসে পড়ছে দেয়ালের পলেস্তারা। ভোগান্তির কারণে ১৩০টি পরিবারের মধ্যে ৮২টিই গুচ্ছগ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরে ২০১৭-১৮ সালে নির্মাণ করা হয় দহগ্রাম-১ গুচ্ছগ্রাম। পরে সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওই ইউনিয়নের বড়বাড়ি এলাকায় ২০১৮ সালে গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্টে (সিভিআরপি) আওতায় তিন ধাপে নির্মাণ করা হয় ১৩০টি বসতবাড়ি। সেখানে পর্যায়ক্রমে ভূমিহীন, গৃহহীন, নদীভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত ২-৩ বছরে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় গুচ্ছগ্রামের ঘরের মাটি ও মেঝে ধসে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দেয়ালের পলেস্তারা খুলে পড়ায় বাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ঘরগুলো। বাসিন্দাদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ঘর মেরামত করতে পারেননি। ফলে অনেক পরিবার গুচ্ছগ্রাম থেকে চলে যায়। তাছাড়া গুচ্ছগ্রামে চলাচলের একমাত্র সড়কটি খানাখন্দে ভরা। শুকনা মৌসুমে ধুলাবালু এবং বর্ষায় কাদামাটি ভরা সড়কে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা মৌসুমে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে এখানকার বাসিন্দাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন (৪৮) বলেন, নদীভাঙনের শিকার হয়ে জমি, বসতভিটা হারিয়ে এখানে এসেছি। এখানে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ঘরগুলোর মাটি ধসে যাওয়ায় অনেকে চলে গেছেন। আমিও অন্যত্র চলে যাচ্ছি। ১১ নম্বর ঘরের বাসিন্দা জুলেখা বেগম (৩০) বলেন, কাজ না করলে তাদের ভাত জোটে না। গুচ্ছগ্রাম থেকে যাওয়া-আসার রাস্তার খুব সমস্যা। মাটি সরে যাওয়ায় ঘরে থাকা যায় না। দহগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, গুচ্ছগ্রামের বেহাল অবস্থা নিয়ে বারবার কথা বলছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করা খুব কষ্টের। পিআইও উত্তম কুমার নন্দি বলেন, পাঁচ-ছয় বছর আগে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। একটু তো সমস্যা হবেই। বিষয়টি ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই সংস্কার হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় তারা অন্যত্র চলে গেছেন। ঘরগুলো সংস্কারের উদ্যোগ শিগগিরই নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর