বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দিনাজপুরের সব থানা গত কয়েক দিন বন্ধ ছিল। কয়েক থানায় হামলার পাশাপাশি অন্যগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল অপ্রতুল। গত বৃহস্পতিবার পুলিশের মহাপরিদর্শক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান জানান। নির্দেশনা মেনে কর্মস্থলে ফিরেছেন পুলিশ সদস্যরা। তবে অনেক পুলিশ সদস্যের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল সকালে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার প্রধান ফটকে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের কয়েকজন সদস্য সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। হেল্প ডেক্সে বসে দাপ্তরিক কাজ করছেন ডিউটি অফিসারও। ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের অন্তত ২০ জনকে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ করতে দেখা গেছে। ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, চলমান সহিংসতার ঘটনায় যারা বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে ছিলেন তারা সবাই বৃহস্পতিবার রাতেই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। গতকাল সকালে জানা যায়, দিনাজপুরের ১৩টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, পুলিশ সদস্যরা প্রায় সবাই উপস্থিত হয়েছেন।
দু-একজন আছেন যাদের বাড়ি দূরে কিংবা ছুটিতে আছেন তারাও দ্রুতই ফিরবেন। আপাতত শুধু দাপ্তরিক কাজকর্ম চলছে। তদন্ত কার্যক্রম শুরু করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। দিনাজপুরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা থানাগুলো পাহারা দিয়েছেন এবং দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। পুলিশ আগামীতে কাজের মাধ্যমে এর প্রতিদান দেবেন।’
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ এবং দেশ ?ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ সদস্যদের ওপরে চড়াও হন। ওইদিন সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা বোচাগঞ্জ থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও বিরামপুর থানা চত্বর, বীরগঞ্জ থানা চত্বরে হেল্প ডেস্ক, পুলিশের পিকআপ ভ্যান এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দিনাজপুর সদরের মুন্সীপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলাকারীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পুলিশ সদস্যরাও নিরাপদ স্থানে সরে যান।