কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের দুই ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা জানান, বন্যার্তদের মধ্যে কলেজের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের জন্য ফান্ড তৈরি করা হয়। ওয়াসিমুদ্দীন মুসলিম ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করে টাকা সংগ্রহ করেন। রবিবার রাত ১০টায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য দুই হলের শিক্ষার্থীদের সভা হয়। পরে ওসমান গণি ছাত্রাবাসের বিদায়ী শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী নাসিম, তুষার, হিরণ, অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মইন ফয়সাল ও শফিকের নেতৃত্বে বহিরাগত কয়েকজন ওয়াসিমুদ্দিন হলে গিয়ে ত্রাণের টাকা জোর করে নিয়ে যায়। এ টাকা তারা সংগ্রহ করেছে বলে কলেজের শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে দেন। এ নিয়ে ওয়াসিমুদ্দীন ছাত্রাবাসের অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে তাদের হলে ডেকে নিয়ে মারধর করে। ওই শিক্ষার্থী হলে গিয়ে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানালে দুই হলের মধ্যে প্রথমে বাগবিতন্ডা এবং পরে সংঘর্ষ হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে।
গুরুতর আহত প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুর রাজ্জাক (২২), গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অমৃত চন্দ্র সরকার (২২), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্বাধীন মিয়া (২১) ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুকেন চন্দ্র বর্মণকে (২৩) শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওয়াসিমুদ্দীন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ওসমান গণি হলের অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাসিম তুষার, হিরণ, শফিক, মঈন, ফয়সাল ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা বিভিন্ন সময়ে বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তাদের হলে আশ্রয় দিয়ে থাকে। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হলের পরিবেশ নষ্ট করে আসছে বলেও অভিযোগ তাদের। খবর পেয়ে কলেজ প্রশাসনের শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল, সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।