ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও। বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস করতে হচ্ছে গাংনী করমদি দারুসসুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের। করোনা মহামারির সময় জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর অতিরিক্ত বিল দেয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। এর পর থেকেই উধাও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ফলে চার বছর ধরে বন্ধ নির্মাণকাজ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, মাদরাসা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদি দারুসসুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার চার তলা ভবন নির্মাণের কাজ পায় কুষ্টিয়ার আনিসুর রহমান নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের অক্টোবরে ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালের এপ্রিলে কাজটি শেষ হওয়ার কথা। তবে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও মাদরাসা ভবনটি হস্তান্তর করতে পারেননি ঠিকাদার। অভিযোগ রয়েছে, করোনা মহামারির সময় কাজ বন্ধ রেখে অতিরিক্ত বিল উত্তোলন করে পালিয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। মেহেরপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, করমদি দারুসসুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার ৭৫% কাজ সম্পন্ন হলেও বিপরীতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কাজ বন্ধ অবস্থায় ২০২২ সালের এপ্রিলে আরও ২৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজ শেষ হওয়ার আগেই পিজি (পারসোনাল গ্যারান্টেড) থাকা প্রায় ১৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা উত্তোলন করতে সহযোগিতা করেন সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুত্তাকিন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাদরাসায় পর্যাপ্ত ভবন না থাকায় তারা মেঝে ও পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস করছে। শিক্ষাকার্যক্রম ও ব্যবহারিক ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা।
শিক্ষকরা জানান, পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদানের পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। মাদরাসার সুপার আবু জাফর জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। এভাবে আরও কয়েকটি মাদরাসার ভবনও পড়ে আছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, অনেক লস ও অন্য কাজের জন্য এ কাজ শেষ করতে পারছেন না। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী বলেন, ‘কাজটি এ মুহূর্তে বন্ধ আছে। আমরা লিখিতভাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজটি করার জন্য তাগাদা দিয়েছি।’ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুত্তাকিন বলেন, ‘কাগজে কলমে ঠিকাদার আমাদের কাছে ৪০ লাখ টাকা পাবেন, যে কোনো সময় কাজ করে দেবেন।’ বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কী কারণে অতিরিক্ত ৩২ লাখ টাকা বিল দিয়েছেন আমার জানা নেই। এর দায়ভারও নিতে চাই না।’