কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সীমান্তবর্তী দৌলতপুর ইউনিয়নের মুকুন্দি গ্রামে স্থানীয়দের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি প্রায় ১০ বছর বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ব্রিজটির অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে রডের চালা ঝুলে আছে। গ্রামবাসী ভাঙা অংশে কাঠের চালা দিয়ে ঢেকে চলাচল করছে; যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। রড সিমেন্টের ব্রিজটি এখন কাঠের সাঁকোতে রূপ নিয়েছে! এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২-১৪ গ্রামের মানুষ। বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই এলাকার স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও আলু-ভুট্টা চাষিরা।
স্থানীয়রা জানায়, পালের বাজার থেকে মুকুন্দি হয়ে কাউয়াদি যাওয়া ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। সরেজমিন দেখা যায়, মুকুন্দি গ্রামে ব্রিজটির অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে পড়ে আছে। শুধু রডের চালা ঝুলে আছে। রেলিংও ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশে গ্রামবাসী কাঠ দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। সেখানে গাড়ি চলাচল দূরে থাক, হেঁটে চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ। ১০ বছর আগ থেকে ব্রিজটি এভাবে পড়ে আছে। একটু ভাঙা থেকে এখন পুরোপুরি পরিত্যক্ত। ব্রিজটির কারণে কৃষক তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। দুর্ভোগে রয়েছে পালের বাজার, সাধারদিয়া, মুকুন্দি, কবির চন্দ্রদি, ভবানীপুর, নতুন বাজার, তুলাতলী, কাউয়াদিসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। এ ছাড়া পাশের চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজনও দুর্ভোগে রয়েছেন। মুকুন্দি গ্রামের কৃষক মো. ছালাম ও জহিরুল ইসলাম বলেন, অন্যগ্রামের ভুট্টার দাম মণ ১২০০ টাকা। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আমাদের গ্রামের কৃষকদের বিক্রি করতে হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। আলু মৌসুমেও মালামাল বাজারে নিতে বেশি খরচ দিতে হয়। সবাহন গ্রামের অটো রিকশাচালক সুফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ ভাঙা থাকায় পাশের গ্রামে যেতে পারি না। এতে আমাদের ভাড়া কমে গেছে। মুকুন্দি গ্রামের কলেজছাত্র সাইদুল ইসলাম বলেন, এ ব্রিজ হয়ে গৌরিপুর ফজলুর রহমান মুন্সী ডিগ্রি কলেজে যেতে হয়। ব্রিজ ভাঙা থাকায় দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হয়। স্থানীয় পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ব্রিজটি ৮-১০ বছর ধরে বেহাল অবস্থায়। এতে আমাদের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে নতুন। খবর নিয়েছি, মুকুন্দি ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য। এটি পুনর্নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করতে পারব। দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বলেন, মুকুন্দি ব্রিজের বেহাল অবস্থার বিষয়টি অবগত হয়েছি। কম বাজেটের মধ্যে কাজ হলে আমরা উন্নয়ন তহবিল থেকে করব। বেশি বাজেট লাগলে এলজিইডির সহযোগিতা নিয়ে কাজ করা হবে।