লালমনিরহাট সদর উপজেলায় সরেয়ারতল এলাকায় রত্নাই নদ পারাপারে বর্ষাকালে কলাগাছের ভেলা ও কাঠের নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকোই ভরসা। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রতিনিধিরা এখানে একটি সেতু নির্মাণে বহুবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই পাড়ের আট গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে রত্নাই নদের এক পাশে সরেয়ারতল ঘাট অন্য পাশে শিবের কুটি। জনপ্রতিনিধিরা অনেকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বাস্তবে কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। বছরের পর বছর এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা বলছেন রত্নাই নদের পূর্বপাড়ে কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবের কুটি, দক্ষিণ শিবের কুটি, বনগ্রাম ও বোয়ালমারী; পাশের মোগলহাট ইউনিয়নের ভাটিবাড়ি ও কোদালখাতা এবং পশ্চিম পাড়ে কুলাঘাটের ধাইরখাতা ও লালমনিরহাট পৌরসভার উত্তর সাপটানা এলাকার মানুষ এই ঘাট ব্যবহার করে পারাপার হন। এখানে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই পাড়ের ২০ হাজারের বেশি মানুষকে। স্থানীয়রা আরও জানায়, দুই পাড়ের বহু শিক্ষার্থী প্রতিদিন নদী পার হয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রেও দুই পাড়ের মানুষ একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে পূর্ব পাড়ের শিবের কুটি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং পশ্চিম পাড়ের লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজে পৌঁছানো হয়ে ওঠে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ, বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা যানবাহন পৌঁছাতে পারে না পূর্ব পাড়ের গ্রামগুলোতে। শিক্ষক তারিকুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘২০১০ সালে বর্ষায় নৌকা দিয়ে পার হতে গিয়ে মোটরসাইকেলসহ নদীতে পড়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্ক আজও মনে হলে গা শিউরে ওঠে। এত বছর পরও সেতু নেই, শুধুই প্রতিশ্রুতি।’ ভ্যানচালক জেবাইদুল ইসলাম বলেন, বারবার শুনি এখানে সেতু হবে, কিন্তু সেই সেতু তো দেখি না।’ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাওসার আলম বলেন, ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। শেষ হলে প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।