রাজবাড়ীর মহাসড়ক এখন অবৈধ যানবাহনের দখলে। কাগজে-কলমে তিন চাকার এসব যান মহাসড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ জেলার বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নসিমন, করিমন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। কম গতির এ যানবাহন বাস-ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। সেপ্টেম্বর মাসে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কল্যাণপুর ও আলিপুরে অবৈধ নসিমান চাপায় নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীতে তাদের ৬৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে। এর মধ্যে গোয়ালন্দ মোড়ে থেকে পাংশা উপজেলার শেয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত ৪৫, গোয়ালন্দ মোড় থেকে বসন্তপুর ৫ এবং ও গোয়ালন্দ মোড়-দৌলতদিয়া ১৪ কিলোমিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের অনেক স্থান দখল করে আছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও মাহিন্দ্র। সংযোগ সড়কগুলোতে একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে এলোমেলোভাবে রাখা শত শত যান। মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড়, গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, চন্দনী বাসট্যান্ড, পাংশা আজিজ সরদার বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে এসব অবৈধ যানের স্ট্যান্ড। দূরপাল্লার বাসচালক জুবায়ের শেখ জানান, মহাসড়কে চলা গাড়ি দ্রুতগামী হবে এটাই স্বাভাবিক। দেখা যায় এই দ্রুতগতির বাহনের সঙ্গে পাল্লা দেয় থ্রি-হুইলারগুলো। এতে দুর্ঘটনা ঘটে অহরহ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, নসিমন, মাহিন্দ্রার দখলে থাকে রাস্তা। যে কারণে গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত বাসের গতি ৩০-৪০ কিলোমিটারের বেশি তোলা যায় না। ধীরে চালানোর কারণে অনেক সময় যাত্রীরা আমাদের সঙ্গে রাগারাগি করেন। আনোয়ার নামে স্থানীয় একজন বলেন, গোয়ালন্দ মোড়ের সঙ্গেই হাইওয়ে থানা। অথচ গোয়ালন্দ, খানখানাপুর, মকবুলের দোকান, গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় মহাসড়কে রয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। এসব স্থানে অর্ধশত গাড়ি সব সময় থাকে। হাইওয়ে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। নামমাত্র দু-একটা যানবাহন ধরে জরিমানা আদায় করে। এগুলো চোর-পুলিশ খেলা মাত্র।
একজন মাহেন্দ্র চালক জানান, তিন চাকার গাড়ি মহাসড়কে চালানোর জন্য গোয়ালন্দ মোড়ে ১০, গোয়ালন্দ বাজারে ৪০ ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ৫০ টাকা দিতে হয়। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। পুলিশ এখন গাড়ি ধরে না। মহাসড়কে অবৈধ ত্রি-হুইলার চলাচলের ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ মাদারীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, তিন চাকার বাহনের সমস্যা দিনে দিনে প্রকট হচ্ছে। আলাদা সার্ভিস লেন এবং মানুষের স্বল্প দূরত্বে চলাচলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যাটা সমাধান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবু অবৈধ থ্রি-হুইলার বন্ধে পুলিশ কাজ করছে।