কেরানীগঞ্জের তালেপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ভিতর ও বাইরে দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে হাঁটুপানি। চিকিৎসাসেবা নিতে এসে রোগীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। ভবনের ভিতরে যেতে না পারায় রাস্তার পাশে বসে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট অজিত কুমার দাস জানান, ছয় বছর ধরে এখানে আছি। ভবনে থাকা যায় না। বর্ষার সময় ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, নিচেও জমে। বছরে ছয় মাস হাসপাতালের আঙিনা থাকে পানির নিচে। মেডিকেল অফিসার আনজুমান আরা বলেন, পানির পচা গন্ধে রোগী-স্বজন সবাই অতিষ্ঠ। বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মোকাদ্দেস বলেন, তালেপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিচু এলাকায় হওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে। সিভিল সার্জন এটি পরিদর্শন করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত হলে সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় তালেপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ছিল এলাকাবাসীর ভরসার জায়গা। এখানে নিয়মিত টিকা কার্যক্রম, প্রসূতিসেবা, ছোটখাটো অপারেশন ও ওষুধ বিতরণ হতো। অবকাঠামোগত দুরবস্থা, বেহাল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ঘাটতির কারণে এখন কেন্দ্রের কার্যক্রম প্রায় স্থবির। চারপাশের ড্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
কলাতিয়া ইউনিয়নের শিক্ষার্থী আনিশা আক্তার বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক নিম্নবিত্ত পরিবার আছে যারা সরকারি এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতেন। এটি দ্রুত সংস্কার ও জনবল বাড়ালে মানুষের উপকার হতো। স্থানীয় বাসিন্দা লতিফ বলেন, ‘আগে এখানে চিকিৎসা নিতে এসে সুবিধা পেতাম। এখন চারদিকে পানি-কাদা, বাচ্চা-বুড়ো নিয়ে ঢোকাই কষ্ট। ডাক্তারও থাকেন না সব সময়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেন্দ্রটিতে নিয়মিত চিকিৎসক থাকেন না, ওষুধ সরবরাহও সীমিত। অনেক সময় সাধারণ জ্বরের ওষুধ বা স্যালাইন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, চারপাশে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। আশপাশের এলাকায় ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা বেড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে পানি নিষ্কাশন ও ড্রেনেজ সংস্কার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, চিকিৎসক ও ওষুধ সরবরাহ বাড়াতে হবে। না হলে গুরুত্বপূর্ণ এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।