মাদারীপুরের রাজৈরসহ আশপাশ উপজেলার ২ লাখের বেশি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম ভরসা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শয্যা, জনবল, যন্ত্রপাতির অভাবসহ নানান সংকটে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় অনেককে বারান্দা বা মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বহির্বিভাগেও প্রতিদিন প্রায় ৫০০ রোগী সেবা নিতে আসে।
জানা গেছে, এ হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন প্রায়ই বিকল থাকে, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনও নিয়মিত চালু থাকে না। রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানান, ১৯৬৮ সালে ১০ শয্যা নিয়ে শুরু হওয়া এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাধীনতার পর ৩১ ও ২০১০ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। রাজৈরসহ আশপাশের ২ লাখের বেশি মানুষের সেবার ভরসা এ হাসপাতাল। বিদ্যমান অপ্রতুল অবকাঠামো ও জনবলে এখন এত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
সরেজমিন দেখা যায়, পুরাতন ভবনের দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে, কোয়ার্টারগুলো বসবাসের অনুপযোগী। নৈশপ্রহরীর পদ শূন্য থাকায় নিরাপত্তাজনিত শঙ্কাও রয়েছে।
রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যানুযায়ী, ১৯ চিকিৎসক পদের বিপরীতে এখানে কর্মরত আছেন মাত্র আটজন। ১১ জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদের মধ্যে কর্মরত দুজন, সহকারী সার্জন সাতজনের স্থলে পাঁচজন, ডেন্টাল সার্জন রয়েছেন একজন। গাইনি বিশেষজ্ঞ নেই। অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ থাকলেও নিয়মিত পাওয়া যায় না। এ কারণে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সার্জারি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকে। কার্ডিওলজি, ইএনটি, চক্ষু ও চর্ম বিভাগের বেশির ভাগ পদই শূন্য।
নার্সিং সুপারভাইজার বিভারানী বাড়ৈ জানান, রোগী এত বেশি যে বাধ্য হয়ে ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে।
রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শামিম আক্তার বলেন, ‘৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকছে। জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। এ ছাড়া পুরাতন ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির লাইন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জেনারেটর ও এক্স-রে মেশিন প্রায়ই বিকল থাকে। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবু আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সেবা চালু রাখতে। এখানকার সমস্যাগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’