উখিয়ায় ৪ বছর বয়সী এক শিশু ফকিরের অলৌকিক কেরামতির ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন জটিল রোগব্যাধীতে আক্রান্তের শিকার শত শত নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর পানি পড়া ও তেল পড়া নিতে শিশু ফকিরের বাড়িতে ভিড় করায় গ্রামটি সরগরম হয়ে উঠেছে।
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কোটবাজার ভালুকিয়া সড়ক হয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার পূর্বে রত্নাপালং ইউনিয়নের তুলাতুলী পূর্বকুল গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ রাজ্জাক (৪)। বয়সে ছোট হলেও সকাল-সন্ধ্যা এখন তার কাছে এসে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত শিশু-যুবক-বৃদ্ধ। রাজ্জাকের কাছে আসা লোকজন বলছেন, তার (রাজ্জাক) স্বভাবসুলভ ভাবভঙ্গি ও কথা শুনে মনে হয় অলৌকিক কিছু উপাদান তার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। তার কাছ থেকে পানি পড়া নিয়ে অনেকের জটিল সমস্যার সমাধান হচ্ছে!
শিশু ফকিরের পিতা আলী হোসেন জানান, রাজ্জাকের মা প্রচন্ড ঘাড়ব্যথা নিয়ে দীর্ঘ দিন কষ্ট পেয়ে আসছিল। গত ৩ মাস আগে প্রচন্ড ব্যথায় অস্থির মায়ের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে রাজ্জাক বলল, মা আমি ঝাড়ফুক করলে তুমি ভাল হয়ে যাবে। এ কথা বলে রাজ্জাক মায়ের ঘাড়ে ৪/৫টি থাপ্পড় মারলে মা সুস্থ হয়ে উঠে। এ খবর জানাজানি হওয়ায় গ্রামের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন রোগের জন্য পানি ও তেল পড়া নিতে ছুটে আসে রাজ্জাকের বাড়িতে। এসব লোকদের অনেকেই নাকি রাজ্জাকের কাছ থেকে পানি ও তেল পড়া নিয়ে রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানান। রাতারাতি খবর ছড়িয়ে পড়ে মহল্লা থেকে মহল্লায়।
সম্প্রতি শিশু ফকিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পানি ও তেল পড়া নেওয়ার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে লাইন ধরে অপেক্ষা করছে। এ সময় ওই গ্রামের ইতালি প্রবাসী কামাল উদ্দিনের মাতা হাসিনা আক্তার (৫৫) জানান, ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ছেলে কামাল উদ্দিন গুরুতর আহত হয়ে সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও কোমরের প্রচন্ড ব্যথায় সে কাজ করতে পারছিল না। শিশু ফকিরের পানি পান করার পর তার ছেলে আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে ইতালি থেকে মুঠোফোনে জানিয়েছে। এছাড়াও একই গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজ মিয়া, এজমা রোগী লোকমান হাকিম, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মিয়া হোসেন, পাইলস রোগী ফুলমতি সহ অসংখ্য রোগী শিশু ফকিরের পানি ও তেল পড়া নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। পানি ও তেলপড়া বাবদ টাকা নেওয়া হয় কিনা জানতে চাওয়া হলে শিশু ফকিরের পিতা আলী হোসেন জানান, দাবি করে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয় না। তবে কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তা গ্রহণ করা হয়। ওই টাকা বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, মকতব, এতিমখানায় দান করা হয়। শিশু ফকির রাজ্জাকের সাথে বেশ কয়েকবার প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া গেল প্রাপ্ত টাকা দিয়ে সে একটি মসজিদ নির্মাণ করবে। এর বেশি কিছু সে বলতে নারাজ।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ