নাটোরে সিরিজ বোমা হামলা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ৭ জন আসামীর মধ্যে ৬ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। নিরাপত্তার কারণে গাজিপুরের কাশিমপুর কারাগারের আসামী জেএমবি নেতা শফিউল্লা ওরফে তারিককে আদালতে হাজির না করায় আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় ওই আসামীর অনুপস্থিতিতেই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, আব্দুর রশিদ, সিহাব উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, হাফিজুর রহমান ও আব্দুল মতিন। খালাস প্রাপ্তরা হলেন, শহিদুল ইসলাম ফারুক ও শফিউল্লা ওরফে তারিক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি সদস্যরা নাটোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ন ৮ টি স্থানে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। এঘটনায় সরকার পক্ষ বাদী হয়ে ৭ জেএমবি নেতার নামে মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ৬৫ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৪২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে আদালত। দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর মামলা চলার পর চলতি মাসের ২৩ তারিখে মামলার শুনানী শেষে আজ ২৮ মার্চ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেন আদালতের বিচারক।
সোমবার সকালে রাজশাহী কারাগার থেকে একজন এবং নাটোর কারাগার থেকে ৫ জনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে হাজিরকৃতরা আব্দুর রশিদ, সিহাব উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, হাফিজুর রহমান, শহিদুল ও আব্দুল মতিন। পরে আসামীদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটার অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী, আসামীদের স্বীকারোক্তি এবং সাক্ষ্য প্রমানে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে খালাসকৃত দুইজনের মধ্যে ঢাকার একটি মামলায় শফিউল্লা তারিকের মৃত্যুদন্ড ও লালমনিরহাটের একটি মামলায় শহিদুল ইসলাম ফারুকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দন্ডিত হয়েছেন।
অপরদিকে, আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমেল খান চৌধুরী বলেন, সরকার পক্ষ আদালতে ৪২জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু সাক্ষীরা তাদের সাক্ষ্যে অভিযুক্তরা যে বোমা হামলার ঘটনার সাথে জড়িত তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তিনি মনে করেন তার মক্কেলরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি উচ্চ আদালতে আপীল করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ মার্চ ১৬/ সালাহ উদ্দীন