বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু'র প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূলে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। দুর্যোগ মোকািলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলাগুলোতে মোট ৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে গোটা উপকূলে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কখনও কখনও হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সাথে দমকা বাতাস বইছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর সংকেত দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কুয়াকাটা-সোনারচর সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে অর্ধশতাধিক চরসহ নিম্মাঞ্চল। মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলের দিকে ফিরে আসতে শুরু করেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছোট ছোট নৌযানসহ মাছ ধরার ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর কৃর্তক স্থানীয়ভাবে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলায় অভ্যন্তরীণ রুটের ৬৫ ফুটের নিচের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসক একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী জানান, দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য জেলা প্রশাসন জরুরি সভা করা হয়েছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিমসহ ২১২ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৮০ হাজার নগদ টাকাসহ শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নেজারত ডেপুট কালেক্টরেট (এনডিসি) আলমগীর হোসেন জানান, দুুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি ও প্রতিটি উপজেলায় মোট ৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
রোয়ানু'র প্রভাবে পটুয়াখালীতে মানুষের মধ্যে অজানা আতংক বিরাজ করছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংক ছড়িয়ে পরছে অর্ধশত চরের মানুষের মাঝে। মৎস্য বন্দর আলীপুর, মহিপুর, ঢোস, রাঙ্গাবালী, মৌডুবিসহ বিভিন্ন স্থানে নোঙ্গর করছে ট্রলারসহ জেলেরা।
রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, জেলার মূল ভূখন্ড থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগকালীন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন চরের জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, পায়রা বন্দরসহ পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী নৌ-বন্দর সহকারী উপ-পরিচালক মাহতাব উদ্দিন শেখ জানান, পটুয়াখালী নদী বন্দরকে ২ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে যা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/২০ মে ২০১৬/শরীফ