২৬ মে, ২০১৬ ২০:৩৩

ঠাকুরগাঁওয়ে পরাজিত প্রার্থীর ভয়ে অবরুদ্ধ গ্রামবাসী

আব্দুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও:

ঠাকুরগাঁওয়ে পরাজিত প্রার্থীর ভয়ে অবরুদ্ধ গ্রামবাসী

চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর লোকজনের অব্যাহত হুমকিতে এক গ্রামের সংখ্যালঘু ভোটাররা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। যেতে পারছেন না হাট-বাজারেও। এমনকি তাদের সন্তানরাও স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না।

ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের দৌলাপাড়া গ্রামের।

গত দুই সপ্তাহ ধরে গ্রামে এভাবে বন্দি থাকার পর এ ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে গ্রামবাসী বৃহস্পতিবার নিজ এলাকায় মানববন্ধন করেছে। এর আগে বুধবার অবরুদ্ধ গ্রামবাসী ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবরে গণ আবেদন করেছেন।

গণ আবেদন হাতে পাওয়ার কথা অস্বীকার করে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেছেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ জানা নেই। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া অভিযোগের রিসিভ কপি সংবাদকর্মীদের হাতে দেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, চতুর্থ ধাপে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলার ২নং আখানগর ইউনিয়নেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আখানগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে মেম্বর প্রার্থী মোর্শেদ আলম লালু পরাজিত হন। আর বিজয়ী হয়েছেন মুনিরাম বর্মন। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মেম্বার প্রার্থী লালু ও তার কর্মী সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী সমর্থক ও তাদের দৌলাপাড়ার লোকজনকে হাট-বাজারে যেতে দিচ্ছেন না। আর এ ভয়ে ওই এলাকার ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

বিজয়ী মেম্বার মনিরাম জানান, আখানগর তাদের বাড়ির নিকটবর্তী বাজার। কিন্তু ভোটের পর থেকে দৌলাপাড়ার লোকজন আখানগর বাজারে যেতে পারছে না। কারণ ওই বাজারে যেতে লোকজনকে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী লালুর বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে হয়। লালুর বাড়ির পাশে গেলে তার কর্মী সমর্থকরা লোকজনকে রাস্তা থেকেই ফেরত যেতে বাধ্য করছে।

তিনি আরো জানান, কয়েকদিন পূর্বে নূর ইসলাম নামে আমার একজন নির্বাচনী এজেন্টকে রাস্তায় আটক করে মারপিট করে লালু ও তার সমর্থকরা।

ধরনী বর্মন নামে গ্রামের একজন জানান, শুধু ভোটাররাই নয়, গ্রামের স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারছে না।

এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ওই এলাকাতেই গিয়েছিলাম। তাদের মিমাংসা করারও প্রস্তাব দিয়েছি। তাছাড়া আমি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান হয়েছি। এখনো ক্ষমতা পাইনি।

এ ব্যাপারে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মোর্শেদ আলম লালু জানান, নির্বাচনকে ঘিরে আমি মামলা করেছি। তবে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার হুমকি দেয়া হয়নি। এটি আমি ও আমার কোনো লোক করেনি।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাদ আহামেদ এর সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

বিডি-প্রতিদিন/ ২৬ মে ১৬/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর