জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে লামার ইয়াংছা মুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মাঝে মধ্যেই বেঞ্চ বা মাথার ওপর খসে পড়ে পুরাতন ভবনের পলেস্তরা। বর্ষা এলে ছাঁদ চুয়ে পড়ে পানি। যে কোন সময় ছাঁদ ধসে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যন্ত এলাকার এ বিদ্যালয়টি সংস্কারের দাবি উঠলেও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসিন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিন দেখা যায়, ১৯৮৬ সালের লামা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর সীমান্তে দুর্গম এলাকায় বিদ্যালয়টি স্থাপিত। রেজিষ্টার্ড স্কুল হিসেবে শুরু হয়ে ২০১৩ সালের ১লা জানুয়ারি বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের আওতায় আসে। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মৃত মংচিং মার্মানী, মাষ্টার জাফর আহম্মদ ও আতিকুর রহমানের দান করা এক একর জমির নিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২-৯৩ অর্ধবছরে এলজিইডি'র মাধ্যমে দুইটি কক্ষ নিয়ে বিদ্যালয়ের একমাত্র পাকা ভবনটি নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৪-০৫ সালে আরেকটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে মোট তিনটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও পুরাতর দু'টি কক্ষ একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনের ছাদের বিভিন্ন অংশ থেকে কংকর, বালু খসে খসে পড়ছে। কয়েকটি স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় ছাদটি ভেঙে পড়তে পারে শিক্ষার্থীদের উপর।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল জলিল জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার, শ্রেণিকক্ষ সম্প্রসারণ, নতুন ভবন নির্মাণ, খাবার পানি সহ নানা সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এবং কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এথোয়াই মার্মা বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারি সংকট না থাকলেও শ্রেণি কক্ষের তীব্র সংকট রয়েছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আশপাশে আর কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এ বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মানও ভালো। তবে বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা বিরাজ করছে। সমস্যা সমাধানে শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ কামনা করছি। পানীয় সমস্যা সমাধানে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কাজ করা হবে।
লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে রেজুলেশন করে আমার দপ্তরে জমা দিতে বলা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণে সুপারিশ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ