নেত্রকোনা মুক্ত দিবস আজ (৯ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় জেলাটি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
দিবসটি পালনের মধ্যদিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের রায় কার্যকর ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বধ্যভূমিগুলোকে চিহ্নিত করে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবিও জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে নেত্রকোনা জেলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত নিরস্ত্র মানুষ পাক বাহিনীর হাতে নিহত হন। সম্ভ্রম হারান অনেক মা-বোন। পাক সেনারা জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। নেত্রকোনা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজটিতে পাক বাহিনী তাদের ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করতো। অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের সাক্ষী হয়ে আজও এই কলেজটি দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৭১ সালের এই দিনে শহরের নাগড়াস্থ সরকারি কৃষি খামারে সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে হানাদার মুক্ত হয় নেত্রকোনা। ওইদিন উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। যুদ্ধে আবু খাঁ, আব্দুর রশীদ ও সাত্তার নামে তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের স্মৃতি রক্ষার জন্য নেত্রকোনা কালেক্টরের চত্বরে একটি স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুরে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেদিন শহীদ হন নেত্রকোনার ডা. আবদুল আজিজ, ফজলুল হক, জামালপুরের জামাল উদ্দিন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নুরুজ্জামান, দীজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, ইয়ার মাহমুদ ও ভবতোষ চন্দ্র দাস। এসব মহান বীর শহীদকে উপজেলার সীমান্তবর্তী লেঙ্গুরা সীমান্তের ১১৭২ নম্বর ভারতীয় সীমান্ত পিলারের কাছে সমাহিত করা হয়।
জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি চিহ্নিত বধ্যভূমি সংরক্ষণ করে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার দাবি জানিেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার নুরুল আমিন। সেইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ত্বরান্বিত করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
নেত্রকোনা মুক্ত দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান বলেন, যেসব চিহ্নিত বদ্ধভূমি আছে সেগুলোর স্মৃতিরক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা আছে।
বিডি প্রতিদিন/ ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম