লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের চর কলাকোপা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত মো. জাকের মাঝি মারা গেছেন। রবিবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হলে নিহতের স্বজনরাসহ বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
এদিকে, এ ঘটনায় রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের পর প্রতিপক্ষের ৬ জনকে আটক আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তারা হলে আবদুল মালেক, মো. গিয়াস, মো. বেলাল, ফরিদ উদ্দিন, মো. হেলাল ও ফারুক।
নিহত জাকের মাঝি উপজেলার চর কলাকোপা গ্রামের মহর আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় চর কলাকোপা গ্রামের আবুল হোসেন গংদের সাথে একই গ্রামের নাজিম উদ্দিন (নাজু) গংদের একই এলাকার তিন একর জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধীয় ওই জমি দীর্ঘদিন থেকে আবুল হোসেন গংদের দখলে আছে। শনিবার সকালে নাজিম উদ্দিন গং লোকজন নিয়ে ওই জমিতে মাটি কাটতে গেলে আবুল হোসন গংদের বর্গাদার জাকের মাঝি বাঁধা দেয়। এসময় তারা জাকেরকে পিটিয়ে আহত করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংষর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
আহত জাকের, মতিন, ইমাম হোসেনসহ কয়েকজনকে নোয়াখালী হাসপাতাল ও ফরিদ, মালেক, মান্নান, কহিনুর বেলাল হোসেন, গিয়াস উদ্দিনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত জাকের মাঝিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে রবিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে জাকির হোসেনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী নাজু গংয়ের সমর্থক ফরিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে একটি বসত ঘরসহ তিনটি ঘর পুড়ে যায়।
এর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদ উদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বিরোধীয় ওই সম্পত্তি ক্রয় সূত্রে তারা মালিক হয়ে ওই জমিতে মাটি কাটতে যান। এ সময় স্থানীয় ইউছুফ ও আজাদ মেম্বার তাদের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ তার।
তবে স্থানীয় আজাদ মেম্বার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নাজু গংরা নিজেরা অগ্নিসংযোগ করে এখন অন্যের ওপর দায় চাপাতে অপচেষ্টা করছে।
এদিকে নিহত জাকির মাঝির ছেলে জাহের মাঝি জানান, ৩০ বছর ধরে তারা ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন, হঠাৎ নাজু গংরা এসে তার বাবার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বাবা হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০/১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আহত জাকের মাঝি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ খবর শুনে কে বা কারা ফরিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে তা এখনো জানা যায়নি।
থানায় আবুল হোসেন বাদি হয়ে ১৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগের বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১১ ডিসেম্বর, ২০১৬/মাহবুব