দীর্ঘ ১৬ মাস স্থগিত থাকা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
নতুন এ কমিটিতে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান মীরকে আহবায়ক এবং শরণখোলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জীবন, ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম শরীফ ও হাসান হাওলাদারকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি জিয়াউল হাচান তেনজিনকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য পদ প্রদান করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।
অপরদিকে, একই দিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শরণখোলা সরকারি কলেজ শাখার চলমান কমিটি ভেঙে দিয়ে ২৬ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। কমিটিতে সাইফুল ইসলাম সাব্বিরকে আহ্বায়ক এবং সিয়াম হাওলাদার বাবু ও রিয়াজ আকনকে যুগ্ম-আহবায়ক করা হয়েছে।
এদিকে, নতুন ঘোষিত এ আহবায়ক কমিটিতে বেশ কয়েকজন রাজাকারের বংশধর, অছাত্র, বিবাহিত, সরকারি চাকরিজীবী ও মাদকাসক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রকৃত ছাত্র ও পদ বঞ্চিতরা।
কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ কলেজ ক্যাম্পাস ও উপজেলা সদর রায়েন্দাবাজারে প্রতিবাদ মিছিল এবং পথসভা শেষে শরণখোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে শরণখোলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সদ্য ঘোষিত উপজেলা কমিটির আহবায়ক হাসান মীর একসময় ইভটিজিং মামলায় সাজা খেটেছেন। কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম সাব্বির কোনো ছাত্রত্ব নেই। তিনি বেশ কয়েকবার মাদক ও ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, কলেজ শাখার এক নম্বর যুগ্ম-আহবায়ক সিয়াম হাওলাদার বাবু বাংলদেশে রাজাকারের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা একে এম ইউসুফের প্রোপুত্র ও শরণখোলার চিহ্নিত রাজাকার আ. হাই হাওলাদারে নাতি। উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির ৮ নম্বর সদস্য টুল তালুকদার রায়েন্দা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। ১২ নম্বর সদস্য আরিফুল ইসলাম বাবু মোল্লা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষক। কমিটির ৪৩ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনই অছাত্র, চাকুরে, ব্যবসায়ী, মাদকসেবীসহ বিভিন্ন অভিযোগ অভিযুক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান বিতর্কিত উপজেলা ও কলেজ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে প্রকৃত ছাত্রদের নিয়ে কমিটি ঘোষণার দাবি জানানো হয়। এসময় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম মিরাজ, তাজুল ইসলামসহ পদ বঞ্চিত ও সাবেক ছাত্রনেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক হাসান মীর বলেন, পদ বঞ্চিতরা ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সকল গ্রুপিং ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে সবাইকে নিয়ে পরিচ্ছন্ন ছাত্ররাজনীতি করতে চাই। কমিটিতে যদি কোনো অছাত্র বা বিতর্কিত লোক থেকে থাকে সেটা জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছিল।
বিডি প্রতিদিন/১ আগস্ট, ২০১৭/ফারজানা