নাটোরের সিংড়ায় গৃহবধূ শাপলা বেগমের (২৪) হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পরকীয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে আপন দেবরই শাপলাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে গৃহবধূর দেবর বাবু আলী ও তার বন্ধু রহিম হোসেন সরাসরি জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। মূল অভিযুক্ত বাবু উপজেলার গটিয়াগ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, বাবুর বড় ভাই হোসেন আলি প্রায় দুই বছর আগে বিদেশ যায়। এই সুযোগে বাবু ও তার ভাবি শাপলা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ভাবি শাপলা বেগম দেবর বাবুকে জানায় তিনি মা হতে চলেছেন। এজন্য বাবুকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় শাপলা। তখন থেকেই পরকীয়া ধামাচাপা দিতে বাবু তার বন্ধু রহিমের সাথে ভাবিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক, গত ২৭ মে টাকা পয়সা নিয়ে ভাবিকে পালিয়ে বিয়ে করার কথা বলে। বাবুর কথা মতো শাপলা ঐদিন রাত ১২টায় দুই বাচ্চা রেখে দেবর এবং তার বন্ধু রহিমের সাথে মোটরসাইকেল যোগে অজানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সিংড়া এলাকায় শাঐল গ্রামে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবু ও তার বন্ধু রহিম মিলে ধারালো চাকু দিয়ে শাপলা বেগমকে জবাই করে হত্যা করে শাপলার সঙ্গে থাকা এক লাখ টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। পরদিন স্থানীয়রা মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পরে এই ঘটনায় শাপলার ভাই আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে সাত জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে ডিবি পুলিশ হত্যা রহস্য উদঘাটন করে। রবিবার রাতে মামলার তদন্তকারী অফিসার এস.আই আশরাফুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ শাপলা হত্যার প্রধান আসামি বাবু আলীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি পুলিশের চৌকস একটি দল। এ সময় হত্যা কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও শাপলার কাছ থেকে নেওয়া এক লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
সোমবার বিকেলে বাবু আলীকে আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে শাপলা হত্যার মূল কারণ, পরিকল্পনা এবং কিভাবে কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বিস্তারিত তথ্য দেয় বাবু । হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বাবুর বন্ধু রহিমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার