বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ম্যানিজং কমিটি গঠন, শিক্ষক নিয়োগ, স্কুল একাউন্টের স্বচ্ছতা না থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বগুড়া জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারীরা দ্রুততার সাথে স্কুলের সকল অনিয়ম দূর করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। স্কুলের অভিভাবকদের পক্ষে বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও বরাবর ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর এবং একই বছরের ২৩ নভেম্বর বগুড়া জেলা প্রশাসক এবং রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ১৯ নভেম্বর অভিযোগ গুলো দায়ের হয়।
জানা যায়, বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলায় অবস্থিত হুয়াকুয়া দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়। সোনাতলা উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৩ সালে। গ্রামে মাধ্যমিক শিক্ষা বিস্তারে শুরু থেকেই স্কুলটি কো-এডুকেশন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫শ’।
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল বারী ২০০৯ সালের ৯ ডিসেম্বর সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। তার নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে তৎবির আর সুপারিশ। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়র পর থেকে আব্দুল বারী তার স্ত্রী, সন্তান, চাচাত ভাই বোন, ভাগ্নেদের নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই কমিটি ক্ষমতার জোরে টিকিয়ে রাখার পর এ বছর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মেয়াদ শেষ হয়। এরপর তড়িঘড়ি করে ফের নিকট আত্নীয়দের নিয়ে কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠান। এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার সুধীজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আপেল মাহমুদ জানান, নিয়মানুযায়ী রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ এবং অনিয়ম বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে সকল ঘটনা প্রকাশ পাবে। তিনি তার অভিযোগ নামায় উল্লেখ করেছেন যে, স্কুলের অধিক হারে বেতন, অযৌক্তিক সেসন ফি ও অধিক হারে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফি ধার্য করা হয়। শিক্ষক নিয়োগে প্রধান শিক্ষক বড় অঙ্কের যে অর্থ নেন তা ব্যাংকে জমা করেন না। তার কামেল পাশ ছেলে আব্দুল আজিজকে কৌশলে নিয়োগ দিয়েছেন।
বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার গোপাল চন্দ্র সরকার জানান, ওই স্কুলের অনিয়মের তদন্তের দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন। তদন্ত কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসি রেজাউল করিমসহ ক’জন শিক্ষক ও সুধীজন জানান, ম্যানেজিং কমিটি গঠনে তাদের জানানো হয়নি। গোপনে কমিটি করে থাকে। নিজের মত করে তিনি কমিটি গঠন করে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল বারী জানান, তিনি কোন অনিয়ম করেননি। যারা বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারেনি, তারা তো অভিযোগ করতেই পারে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার