বগুড়ায় বিশ্ব ভালবাসা দিবস আর বসন্ত উৎসবের আমেজের রঙ ছড়িয়ে পড়েছে। আর এমন রঙে রাঙিয়ে বগুড়ার হাজারো তরুণ তরুণী বসন্ত আর বিশ্ব ভালবাসায় দুদিন পার করলো নানা আয়োজনে। আর এই দুই দিবসকে ঘিরে বগুড়ায় একটি ভালবাসার গোলাপ বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা করে। রজনীগন্ধ ১০, গ্লাডিওলাস ২০, চায়না গোলাপ ২৫, গাঁদা ৩ টাকা, নারীদের মাথায় দেয়ার ফুলের রিং ১০০ টাকা করে। টানা দুই দিবসকে ঘিরে বগুড়ার ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল সরবরাহে হিমশিম খেয়ে যায়।
মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিনে বগুড়ায় ফুল বিক্রি হয়েছে ১২ লাখ টাকার।
বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবের আমেজে এবারে বেশ জমে উঠেছে বগুড়ার ফুল মার্কেট। বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কের ধার ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই ফুল মার্কেটে পহেলা ফাল্গুন থেকেই ক্রেতাদের ভিড়। বুধবার ভালবাসা দিবসেও একই অবস্থা বিরাজ করে। ফুলের দাম চড়া হলেও ভালবাসার মানুষকে সাজাতে হবে দামে তাতে কি বা আসে যায়। ‘লাল গোলাপ’ ভালবাসা দিবসে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে।
ভালবাসা দিবসে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লাল গোলাপ (চায়না) ৩০ টাকা, অন্যান্য গোলাপ আকার ভেদে ১৫ থেকে ২৫ টাকায়। গোলাপ ছাড়াও গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গাঁদা, জিপসি, অটিস্টিকসহ হরেক রকমের ফুল বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা করে।
বুধবার সকালে ফুল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ফুলের দোকানগুলোতে ভালবাসা দিবসের সাথে তাল মিলিয়ে নানা ভাবে ফুলে ফুলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সব দোকানেই ক্রেতাদের ভীড়। ক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ-তরুণী, লাল গোলাপ কিনছেন তারা। গোলাপ ছাড়াও গ্লাডিওলাস, জারবেরা, জিপসি, রজনীগন্ধার চাহিদা ছিল বেশি।
বগুড়া জেলা ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও করতোয়া ফুলঘরের স্বত্তাধিকারী অমিত দাস লক্ষন জানান, বগুড়ার এই ফুল মার্কেটে সারাবছর ফুল বিক্রি হলেও বিশেষ দিবস ও উৎসবকে সামনে রেখে বগুড়া, যশোরের গদাখালি, কালিগঞ্জসহ বিভিন্ন মোকাম থেকে রেকর্ড ফুল আসে এখানে বিক্রির জন্য। এবার প্রতিটি দোকানে গড়ে ৪ থেকে ৭ হাজার লাল গোলাপ তোলা হয়েছে বিক্রির জন্য। এর সাথে আরো কয়েক হাজার গ্লাডিওলাস ও হাইব্রিড জাতের রজনীগন্ধা এসেছে প্রতিটি দোকানে। চায়না গোলাপ ৩০ টাকা ও অন্যান্য গোলাপ ১৫ থেকে ২৫ টায় বিক্রি হচ্ছে। ১৭টি দোকানে গড়ে ৪ হাজার পিচ গোলাপ ধরা হলে মোট ৬৮ হাজার গোলাপ এসেছে। প্রতিটির গড় মূল্য ১০ টাকা ধরলে প্রায় ৭ লাখ টাকা মূল্য দাঁড়ায়। এর সাথে অন্যান্য ফুলের কথা ধরলে এবার ১০ লাখ টাকার উপরে ফুল বিক্রি করেছে সবাই মিলে। এটি সারা বছর থাকে না। সারা বছর ফুল বিক্রি হয় কম। আর বিশেষ দিবসকে ঘিরে ফুল বিক্রি হয় বেশি।
ফুল বিক্রেতা মোঃ সুলতান জানান, সারা বছরই কম বেশি ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্তকে ঘিরে বগুড়ায় ফুল বিক্রি হয়েছে। সামনে আসছে একুশে ফেব্রুয়ারি এদিনও ফুল বিক্রি হবে বেশি। আশেপাশের জেলার লোকজন ফুল ক্রয় করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব, সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষার্থী তরুণ তরুণীরাও ফুল ক্রয় করে থাকে।
বগুড়া শহরের আপন ফুলঘরের প্রোপ্রাইটার মোঃ বাটু জানান, হাইব্রীড জাতের গোলাপ ১৫ টাকা ও ২০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। মাথায় ফুলের রিং বিক্রি করা হয়েছে ১০০ টাকা করে। ফুল দিয়ে খোঁপায়, হাতে পরানোর মালা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা করে। এছাড়া একটি রহনীগন্ধার সাথে একটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে। বিশেষ দিবস থাকলে ফুল বিক্রি হয়। এছাড়া সারাবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে ঘিরে ফুল বিক্রি হয়ে থাকে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন