লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত। ৫ ঘণ্টা পর এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় চরম অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সবাই। বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়ঃবৃদ্ধদের। লোডশেডিংয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে, ব্যহত হচ্ছে আসন্ন এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি, বিদ্যালয়ের পাঠদান ও অফিস আদালতের কার্যক্রমও।
দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে রায়পুরের গ্রাহকরা। উপজেলার চর আবাবিল গ্রামের মো. মাইনুদ্দিন মোল্যা ও চরবংশী গ্রামের মো. আব্দুল মতিন বলেন, সন্ধ্যায় ১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে ৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। দিনেও একই অবস্থা।
পৌর শহরের মধুপুর এলাকার মো. নোমান বলেন, অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন লোকজনকে জেনারেটর ও সৌরবিদ্যুতের উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। এতে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষুদ্ধ লোকজন রায়পুরে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে সাতটি গাড়িতে আগুন দেয়। আগুনে কয়েক লাখ টাকার বৈদ্যুতিক মালামালও পুড়ে যায়। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীরা লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে গাছের গুঁড়ি ও ইট ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে সাত-আট ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন।
রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। মোট চাহিদা প্রায় ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু পানপাড়া ও রায়পুরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাবস্টেশন) বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ মেগাওয়াট। এ দুই উপকেন্দ্র থেকে সাতটি ফিডারে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম থাকায় নিয়ম করে একটি ফিডার বন্ধ করে অন্যটি চালু করা হয়।
জানতে চাইলে রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের (ডিজিএম) শেখ মনোয়ার মোর্শেদ বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে একটি ফিডার বন্ধ করে অন্যটি চালু করা ছাড়া উপায় থাকে না। ঘুরে ঘুরে বন্ধ ফিডারে আবার সংযোগ দিতে চার ঘণ্টার মত সময় লেগে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। রামগঞ্জ উপজেলার বিদ্যুতের সাবস্টেশনটি আগামী মে মাসে চালু হলে শিগগিরই অবস্থার উন্নতি হবে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ মার্চ, ২০১৮/ফারজানা