পাবনার চার উপজেলায় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে আম লিচু, ভুট্টা, সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে ঘরের টিন ফুটো হয়ে নারী-পুরুষ, শিশুসহ প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৫ টা থেকে সাড়ে ৫ পর্যন্ত এই ঝড়ো হাওয়া ও ভারি শিলাবৃষ্টি হয়। আহতরা চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থানে ভর্তি হয়েছে।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোরশেদ আলম জানান, শিলাবৃষ্টি থামার পর পরই একের পর এক আহত রোগী হাসপাতালে আসতে থাকে। আমদের তাদের চিকিৎসা দিতেই হিমসীম খাওয়ার মতো অবস্থা। অন্তত অর্ধশত জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি বলেও জানান তিনি।
চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা জানান, আমার জীবনে এ ধরনের শীলা বৃষ্টি দেখি নাই। আমার এলাকার উঠতি ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে লিচু ও আমের কুড়ি ঝড়ে গেছে। অনেক বাগান মালিকই এবার চরম ভাবে রেলাকসানের মুখে পরবে।
উপজেলা পরিষদ থেকে তাৎক্ষনিক জেলা প্রশাসনকে বিষটি অবহিত করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্থদের একটি তালিকা তৈরী করা হচ্ছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদরের পাটুলীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী রানা হামিদ বলেন, বিকেলে প্রথমে বাতাস শুরু হয়। পরে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এরপরেই শুরু হয় ভারি শিলাবৃষ্টি। এতে করে আমাদের এলাকাসহ উপজেলার অসংখ্য ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।
চাটমোহর পৌর এলাকার ব্যবসায়ী রনি রায় বলেন, আমার জীবনের দেখা প্রথম এমন শিলাবৃষ্টি যা স্মরণকালের ভারি শিলাবৃষ্টি। এতো বড় শিলাবৃষ্টি আমি দেখি নাই।
সাথিয়া উপজেলার নাগডেমরা গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সোলায়মান মিয়া (৫৫) বলেন, আমি এর আগে কখনও এমন ভারি শিলাবৃষ্টি দেখিনি। আমার তিনটি টিনের ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে।
ফরিদপুর উপজেলা আওয়অমীলীগের সাধারন সম্পাদক আলী আশরাফুল কবির বলেন, এই উপজেলাও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষনিক ভাবে আসলে বুঝা যাচে।চ না কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কারোর প্রানহানীর ঘটনা ঘটেনি এটাই আল্লাহর রহমত।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর পাবনার উপ পরিচালক বিভূতি ভূষন বলেন, বিকেলের শিরাবৃষ্টির পর পরই আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নিরুপনরে জন্যে। এখনো সেটা আমাদের হাতে এসে পৌঁছে নাই।
পাবনার জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, পাবনা জেলার ৫টি উপজেলায় ঝড়ো হাওয়া ও ভারি শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। আমার সুজানগর ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই মাঠে গিয়ে খোজ খবর নিয়েছেন। সুজানগরে ৯৮টি ঘর ভেঙ্গে গেছে সেখানে আমরা শুকনা খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক ভাবে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরন করার চেষ্টা করছি বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর