বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন সবজি সজনে ডাঁটা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ (গতকাল শিলা বৃষ্টি ছাড়া) না হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার সজনে ডাটার উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে হাট-বাজারে এর দামও বেশি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর সজনে ডাটা ধরায় স্থানীয় হাট-বাজারে প্রচুর আমদানি হবে বলে আশা করছেন ক্রেতারা।
স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে সজনে ডাটার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটা। নন্দীগ্রামের সজনে ডাটা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি সজনে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রথমে এর দাম চড়া থাকলেও ২-১ সপ্তাহের মধ্যে এর দাম কমে যাবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
অন্যান্য সবজির চেয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণের কারণে সজনে যে কোনো বয়সের মানুষ খেতে ভালোবাসে। চিকিৎসকদের মতে ক্যালোরিয়াম, খনিজ, লবণ ও আয়রনসহ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য সজনে ডাটা। এছাড়া ভিটামিন এ,বি ও সি সমৃদ্ধ সজনে ডাটা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মেয়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে ঔষধি সবজি হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এই গাছের ছাল ও পাতা রক্ত আমাশয় প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
সজনে ডাটা প্রধানত দুই প্রকৃতির। এর মধ্যে এক প্রজাতি বছরে দুই থেকে তিনবার বাজারে পাওয়া যায়-এর নাম রাইখঞ্জন। সজনে গাছ তৈরি করতে চারা রোপন করতে হয় না। যে কোনো পতিত জমির পুকুর পাড় রাস্তা বা বাড়ির আঙ্গিনায় বা যে কোনো ফাঁকা জায়গায় গাছের ডাল পুঁতে রাখলেই অবহেলা অযত্নের মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে ধীরে ধীরে এর ডাল-পালা বেড়ে গাছ বড় হতে থাকে। এমনকি ডাল পুঁতে রাখার পর ছয়মাস থেকে একবছরের মধ্যেই ওই সব গাছে সজনে ডাটা ধরতে শুরু করে। বড় মাঝারি এক একটি গাছে ৯-১০ মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। বিনা পরিশ্রমে, বিনা খরচে অধিক এই আয়কে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষের জন্য আগ্রহী হয়ে সজনে গাছের বাগান করছেন।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব