জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে বালিঘাটা ইউনিয়নের পাটাবুকা এলাকা থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। পাঁচ ফিট গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার ফলে ঝুঁকির মুখে পড়েছে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি। ফলে বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকরাও তাদের জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এভাবে এ এলাকায় শত শত একর জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলছে না। সম্প্রতি এলাকার ৭৫ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে জানা গেছে, পাটাবুকা গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে মমতাজ আলী ও একই গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে রুবেল দীর্ঘদিন ধরে মাটি বিক্রির ব্যবসা করে আসছে। তারা ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী জমিগুলি ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকেরা। ফসলি জমি কেটে মেসি ট্রাক্টরযোগে মাটি পরিবহনের রাস্তাও তৈরি করেছেন।
ভোর বেলা থেকে সারাদিন চলে মাটি পরিবহনের ট্রাক্টর। পাটাবুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়োর সম্মুখ দিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলাচল করে এসব মেসিট্রাক্টর। ফলে ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার লোকজনকে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট।
পাটাবুকা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই এলাকায় আমার ৪০ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ২ জন ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষে মাটির ব্যবসা করছে। তারা এমনভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে যাতে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক তাদের কাছে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এই অবস্থায় জমি রক্ষা করা কঠিন। সেখানে অনেক গরীব কৃষকের জমি রয়েছে। নদীর পার পর্যন্তু কেটে মাটি বিক্রি করেছে। তারা দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনা।
কৃষক সাখাওয়াত হোসেনও একই কথা বলেন। বালিঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহুরুল হক বলেন, এভাবে মাটি কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে ফসলি জমিগুলি ভেঙ্গে নদীর সাথে একাকার হয়ে যাবে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাবে।বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি। প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে যাবার আগেই মাটি ব্যবসায়ীদের মোবাইলে জানিয়ে দেয়। ফলে প্রশাসনের লোকজন তাদের ধরতে পারেন না। ফসলি মাটি কাটার ঘটনা শুধু পাঁচবিবিতেই নয় সদর উপজেলার চারমাথা এলাকায দিন রাত চলছে ফসলী জমি কেটে ইটভাটায় মাটি বিক্রি। এভাবে অাক্কেলপুর ও কালাই উপজেলার মাটিকাটার অভিযোগ রয়েছে বেশ আগ থেকেই।
ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে কৃষকের দেওয়া অভিযোগের কথা স্বীকার করে জেলা প্রশাসক মোকাম্মেল হক জানান, এ ব্যাপারে পাঁচবিবি সহকারি কমিশনার ভূমিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/৩১ মার্চ ২০১৮/হিমেল