ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর শঙ্কাও কেটে গেছে রাজশাহী অঞ্চলে। শেষ পর্যন্ত একরকম শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে মানুষ। তবে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থেমে থেমে শনিবারেও অব্যাহত আছে।
ফণীর প্রভাবে ঝড়ো বাতাসে এ অঞ্চলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উঠতি বোরো ধান। ক্ষেতে ক্ষেতে পাকা ধানের গাছ নুয়ে পড়েছে। বেলা ৩ টার পর রোদের দেখা মিলেছে রাজশাহীতে।
শুক্রবার রাতে ভারি বর্ষণের কারণে রাজশাহী মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র উৎকণ্ঠায় সকাল থেকে রাজশাহীর মানুষজন দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেননি শনিবারেও।
দুপুরের অগে সড়কে নামমাত্র যানবাহন চলাচল করছে। শিরোইল বাস টার্মিনালে সকাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রীবাহী কোচগুলো নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে। তবে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি ছেড়ে গেছে প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে ৬৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কখনো কখনো দমকা হাওয়া আছে। তবে পরিস্থিতি দুপুরের পর অনেকটায় স্বাভাবিক। আপাতত ফণী নিয়ে রাজশাহী, চাাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ এলাকায় আশঙ্কার কিছু নেই বলেও জানান তিনি।
এর আগে ফণী’র আশঙ্কায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন, মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়। দুর্যোগে যেন সাধারণ মানুষ ক্ষতির শিকার না হয় এজন্য সতর্কতাও জারি করা হয়। পদ্মার চরে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে ফণীর তাণ্ডব নিয়ে যতটা আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিলো শনিবার দুপুরের পর থেকে তা কেটে গেছে। মানুষজন বেরিয়ে এসেছে ঘর থেকে।
রাজশাহী অঞ্চলে আম, লিচু নিয়ে মানুষ শঙ্কায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ঝড়ো বাতাসে বরেন্দ্র অঞ্চলের উঠতি বোরো ধানের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে জেলার গোদাগাড়ী, তানোর, পবা ও মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাকা বোরো ধান নুয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানান, তারা খুব শঙ্কায় ছিলেন। মাঠে পাকা বোরোর ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। অনেকের ধান এখনো মাঠেই আছে। কিছু এলাকার ধান ক্ষেতের সঙ্গে নুয়ে পড়েছে। এতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলে। এছাড়া দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাাত হওয়ায় অনেক ধানের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে।
তানোরের চিনাশো এলাকার কৃষক আবদুল আওয়াল জানান, আর কদিন সময় পেলে ভালো ভালোই পাকা ধান ঘরে উঠতো। এখন বাতাসে ধানের গাছ নুয়ে পড়ায় তারা ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন